পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আজ কাল পরশুর গল্প 8 BV0 ‘টেনে নিয়ে চটপট চল বাবা, পা চালিয়ে বাকী পথটা ।” মেরে দি। খিদেয় পেট চো চো কচ্ছে, মাইরি বলছি তোকে রঘু, কালীর দিব্যি। চ’ ঘাই চটপট । পৌছে দিলে তুইও খালাস। ওখানে খাবি তুই আজ। জানিস, আমার ওখানে খাবি। খেয়ে দেয়ে ফিরিস, নয় শুয়ে থাকিবি।” ঘাড় হেঁট করে রাঘব বসে থাকে বেঁচেকায়, করুণ চোখের পলকে তাকিয়েই চোখ নামায়। ধরা গলায় বলে, “বাবুঠাকুর, এ কাপড় মোদের চাই।” 'কাপড় চাই ? আচ্ছা, আচ্ছা দেবখন তোকে একখানা - ’গৌতম ঢোক গেলে, "একজোড়া কাপড় । নে দিকি নি, চল দিকি নি এবার। ওঠ ।” রাঘব উঠে দাঁড়িয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে গৌতমের পায়ে, দু’হাতে দু’পা চেপে ধরে বলে, “আজি চলাচলি নাই বাবুঠাকুর । কাপড়গুলো মোদেৱ দিয়ে তুমি যাও গে। দানছত্তর করে যাও বাবুঠাকুর কাপড়গুলো । মোদের ঘরে মেয়ে-বৌ হন্তাংটাে श्न अाएछ 65 |” গৌতমের ভয় করে। কিন্তু এদের সম্বন্ধে তার ভয় খুব অল্প, তাই মন তার ভয়ের সীমা পেরিয়ে যায়। ঝাঁকড়া চুল ধরে রাঘবকে টেনে তুলে গর্জন করে সে বলে, “হারামজাদা ! গাঁজাখোর ! বজাত ! ওঠ বলছি! মোট তোল! নন্দবাবুকে বলে তোকে জেল খাটাব ছ'মাস । ভৈরববাবুকে বলে তোকে চালা কেটে তুলে দেব দেশ থেকে । মোট তোল, পা চালিয়ে চল ।” । “মেয়েগুলো ন্যাংটা বাবুঠাকুর ? মা-বুন ন্যাংটে, মেয়ে-বেী ন্যাংটো — “ন্যাংটো তো ঘরে ঘরে • • • • বলেই গৌতম অনুতাপ করে। এমন কুৎসিত কথা বলা উচিত হয়নি, রাঘবের মা-বোন মেয়ে-বেীকে এমন কদৰ্য গাল দেওয়া দুটো মন-রাখা কি কি কথা বলে কাটিয়ে দেওয়া যায়। এই ভীষণ কথাটা, গৌতম তাই মনে মনে স্থির করার চেষ্টা করে। বেশী নরম হলে ব্যাটা পেয়ে বসবে। বেশ লাগসই, যুতসই, ওজনসই কথা दी sिाहे | 'কাপড় তবে রইলো বাবুঠাকুর ।” বলে রাঘব হাক দেয় গলা চড়িয়ে। মৃত পত্ত গা যেন জীবন্ত প্ৰাণ পেয়ে কলরব করে শুঠে, কিলবিল করে বেরিয়ে আসে উলঙ্গ প্ৰায় স্ত্রী-পুরুষ । পত্ততে এত লোক থাকে না, অন্য সব বন্তি-গায়ের লোকেরাও আজ ওখানে এসে জড়ো হয়েছিল। গৌতম প্ৰথমে হতভম্ব হয়ে যায়, তারপর উঠে দাড়িয়েই ছুটে পালাবার উপক্রম করে । রাঘব লাফিয়ে গিয়ে তার হাত ধরে ।