পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৫১৪

tov মানিক গ্রন্থাবলী অচেনা মানুষের সঙ্গে কথা কয় খাদু, ছেলে কঁাখে বৌটির সঙ্গে, কুলো আর পাখা হাতে বিধবাটির সঙ্গে একপাল বৌ ছেলে নাতিনাতনী নিয়ে বেসামাল সধবা গিন্নীটির সঙ্গে । দেখা হয়। চেনা মানুষের সঙ্গে । সুবলের মা পাড়ার তিন বাড়িতে ঠিকে কাজ করে । চুপি চুপি শুধোয় সুবলের মা, ‘সাথে কে ?” ‘দ্যাশের মানুষ, কুটুম।” খাদু বলে নিৰ্ভয় নিশ্চিন্তভাবে। চাদ উঠেছে আকাশে, নিচে অসংখ্য আলো জ্বলছে মেলার । একজিবিসনের চোেখ ঝলসানো বাড়াবাড়ি আলো নয়, কাছে তেল মোম গ্যাসের শিখা, কোনোটা কঁাচের মধ্যে কোনোটা খোলা, তফাতে জ্যোৎস্নারাতের তারার মত । “আরও দেখবা ?” 'দেখুম না ; চীনা সার্কাস ? তুমিই তো কইলা। ” চীনা সার্কাসের তাবুটা অনেক বড। চার আনা টিকিটের দাম । লোক টানবার জন্য সামনে খেলার নমুনা দেখানো হচ্ছে এখানে ও, ভিন্ন রকম নমুনা ! মেয়ে আছে তিনটি, দু’জন হলদে রঙের চীনা, একজন কালো রঙের বাঙালী । কালো হলেও ছিরি ছাদ আছে মেয়েটির, রঙ মেখে ভূত ও সাজেনি, সস্তী ঢংএর ভঙ্গিও নেই । চীনা মেয়ে দুটিকে বড় ছোট বোন মনে হয় খাদুর । পিছু বেঁকে পায়ের গোডালি ছুয়ে, হাতের ভরে শূন্যে পা তুলে দাড়িয়ে, ছোট লোহার চাকার ভেতর দিয়ে কৌশলে গলে গিয়ে ওরা খেলার নমুনা দেখাচ্ছে । আঁটো সঁটে যোয়ান বয়সী চীনাটি দু'হাতের দু'টি ছড়ির ডগায় বসানো প্লেট দুটিকে বন বন করে ঘোরাচ্ছে। আরেকজন, তাকে ওর ভাই মনে হয় খাদুর, পাচ ছটা লোহার শিকের আস্ত চাকা নিয়ে চাকার সঙ্গে চাকা আটকে আবার খুলে ফেলছে, কি করে কে জানে! ভেতর গিয়ে খেলা দেখে মুগ্ধ হয়ে যায় খাদু ৬ পাঁচ ছ'বছরের একটা ছেলে, সে দৌড়ে এসে লাফ দিয়ে মাটি না ছয়ে শূন্যে পাক খেয়ে পায়ে ভর দিয়ে দাড়াচ্ছে, বড় একজনের মাথায় হাতের ভর দিয়ে শূন্যে পা তুলে দিচ্ছে, এসব দেখে রোমাঞ্চ হয় খাদুর । টেবিলে কাঠের গোলায় বসানো তক্তার দু’পাশে পা দিয়ে দাড়িয়ে YYS BBB S S BBD TBDS LLBBD DBD S KLLD S LLL DD S DDD D চেয়ে থাকে, মেজো চীনা মেয়েটিকে শূন্যে ডিগবাজি খেয়ে টেবিল ডিঙ্গোতে দেখে, আগুনের চাকার মাঝখান দিয়ে গলে যেতে দেখে সে অভিভূত হয়ে যায়, ভাবে, কত কাল ধরে কি ধৈর্ধের সঙ্গে তপস্যা করে না জানি এসৰ কসরৎ আর কায়দা ওরা আয়ত্ত করেছে।