পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৫৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

K: tr यांनिक यंहांत्रौ ঝুলো বুলি করছিল আট দশ দিন থেকে, হঠাৎ কালকে তার ছুটি মঞ্জুর হয়েছে। পিষে থেতলে মরল কেষ্ট বাতাপি কিন্তু একজনও তার মরণ-চীৎকার শোনেনি, মেসিনের আওয়াজ নাকি চাপা দিতে পারে মরবার আগে মানুষের শেষ আর্তনাদকে ! সোজাসুজি প্রমাণ কিছু নেই, কিন্তু সবাই জানে মনে মনে কেষ্ট দুৰ্ঘটনায় মরেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। ম্যানেজারের, রুমাল-পৌছার বুকে কঁাটা হয়ে বিধে ছিল কেষ্ট, বুঝতে কি বাকী থাকে কারো কেন তাকে মরতে হল, কি করে সে মরাল । রঘুটের পায়, ক্ষোভে আপসোসে অনেকে ফুসছে মনে মনে গিরীনের মত যে, এমন একটা কিছু পাওয়া যাচ্ছে না। যার জোরে পোছার টুটি টিপে ম্যানেজারকে চেপে ধরে বাধ্য করা যায় পুরো নিরপেক্ষ তদন্তের দাবী মানতে । সে পারে। একমাত্র সে-ই শুধু পারে ওই অস্ত্রটি ওদের হাতে তুলে দিতে । কিন্তু বড় যে এক খটকা আছে। রঘুর মনে। কারসাজি কি ফাস হবে ওপরওলাদের ? আটঘাট বেঁধে নিজেদের বঁচিয়ে রাখার ব্যবস্থা কি করে রাখেনি। ওরা ধরি মাছ না। ছুই পানির কায়দায় ? কোনো যোগসাজস। কি প্ৰমাণ করতে পারবে কেউ ? অস্ত্রটা শুধু পড়বে গিয়ে বেন্দার গর্দানে। আর কেউ যদি হত বেন্দী ছাড়া - গায়ের মানুষ, বন্ধু মানুষ । পয়সা ধার চাইলে কখনো না বলে না, ঘরে বোতল খুললে তাকে ডেকে দু’পাত্ৰ খাওয়ায় । রানী খুশি হয় তাকে দেখলে, এসে বোসো বলে ডেকে বসায় আদর করে, ঘরে রাধা এটা ওটা খাওয়ায়, হাসি তামাসা রঙ্গরসে মাসগুল করে রাখে। মুক্তার জন্য বুকটা যে খ খ করে তার, তাও যেন ভুলিয়ে দেয় রানী । ওর চলন ফিরন নরনচরন দেখে রক্ত তাজা হয়ে ওঠে তার, বুকের মধ্যে কেমন করে। আর কি বুঝদার মেয়েটা, কত আপন ভাবে তাকে । ক’দিন আগে হঠাৎ ক্ষেপে গিয়ে সে যে বলা নেই কওয়া নেই জড়িয়ে ধরেছিল তাকে, সে রাগ করেনি, শুধু একটা ধমক দিয়েছিল। বেন্দাকে কিছু বলেনি, নিজে তফাৎ হয়ে থাকেনি আগেরই মত হাসি খুশি আপন ভাব বজায় রেখেছে। কিন্তু বেন্দা শুধু খুন করেনি কেষ্ট বাতাপিকে পোছার টাকা খেয়ে, সে দালাল এই ছিদামের মত । ট্যাক তার ফাঁকা থাকে না কখনো, ঘরে বাইরে সে বোতল বোতল মাল টানে, মিহি শাড়ি কিনে দেয় রানীকে, সব পাপের যা সেরা পাপ তারই টাকাতে। রঘুর মাথার মধ্যে বিছার হলের মত বিধে থাকে। এই চিন্তা। ছুটির পর ক্রুদ্ধ উত্তেজিত মানুষগুলি কেষ্ট বাতাপির দেহটা দাবী করে। ওকে যারা মেরেছে আজ তাদের মারা না যাক, শোভাষাত্রা করে কোিটকে তাৱা স্মশানে