পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

रुिाशबैि চিন্তামণির কোন আপশোস নেই। অপরূপ স্বপ্ন দেখার অ্যু ভরাট হয়ে আছে। গৌরের কথা সে এখনো ভাববে, ( করছে তাও মানবে, কিন্তু এতটা বাড়াবাড়ি আর নয় । , নিজেকে, চারিদিকে তাকাতে হবে। দু’একজন যে কাম কিছু প্ৰত্যাশা করা যায় এমন দু’। একজন, তাদের সম্বন্ধে । তার চলবে না । গোপনে দু’দণ্ড দেখা দেওয়া ছাড়া cो জানে। তাকে নিয়ে একটা কুঁড়ে ঘরে বসবাস করার থাকলেও ভরসা পাবে না । জানাজানি হবার আশঙ্কায় ৫ পাংশু হয়ে গিয়েছিল চিন্তামণি তা ভুলতে পারেনি। এই জালাটাই তার বেশী। যোয়ান ছেলে, মা ছাড়া সংস৷৷৬৯ কোথাও কারও কাছে বাধন নেই কোনরকম, তার কেন এত ভয় তাকে নিয়ে ঘর করার, তাকে ভাত কাপড় দেবার । পটলের অস্তিত্বই সে একরকম ভুলে গিয়েছিল। চিঠিপত্র লেখা আর পড়ার কাজটা আজকাল তার গৌরই করে দিত- পটলের মত অনায়াসে অবশ্য নয়, অতি কষ্টে। প্ৰত্যেক চিঠির দু'দশটা কথা সে তো পড়তে পারে নি। চিন্তামণি যেচে পটলের সঙ্গে আবার আলাপ জমায়। বলে, “কথাই দিকি বলেন না। পটলবাবু।” পটল বলে, “যা তোমার দেমাক ৷” মুখখানা কঁাদ কঁাদ করে চিন্তামণি করুণ সুরে বলে, “দেমাক দেখলেন ? আমার দেমাক ? R মানুষ আমি দাসীগিরি করে খাই—” পটল তখন মুচকে হেসে বলে, “না করলেই হয় দাসীগিরি।” দিনের আলোয় মানুষটার মুখের পাকামির ছাপের মধ্যে চিন্তামণি সাংসারিক বাস্তব দেনা-পাওনার সম্পর্ক গড়ে তোলার শক্ত পাকা বনিয়াদ খুঁজে পায়। এ যা নেবার নেবে, যা দেবার দেবে। তাদের দুজনের কারো বলবার থাকবে না আদান -প্ৰদান কোন দিন কোনপক্ষ ফাকি দিয়েছে। সম্পর্ক হবে সহজ। সাধারণ, দিনগুলি কাটাবে নিশ্চিন্ত স্বাভাবিক সুখে। গৌরের কাছে তো চড়া নেশা আর বুক ধড় পড়ানির আনন্দই শুধু মেলে। পর পর দু’ব্রাত্ৰি গৌরের জন্য বড় বেশী মন কেমন করার যন্ত্রণা সয়ে চিন্তামণির মেজাজটা তাই আরও বেশী খিচড়ে গেল। দিনের বেলা খুজে খুঁজে যেচে যেচে আরও বেশী আলাপ করল পটলের সঙ্গে । পরদিন বিকালে একখানা চিঠি এল চিন্তামণির নামে। পড়ে দেবার জন্য চিঠিখান হাতে নিয়েই পটল পকেটে পুরে দিল।