পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৫৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

o ሁ Y बांनिक हांबुर्वौ শশাঙ্ক নিজেও জানে না বিশেষ দরকার না থাকলেও নিবারণ বা মিঃ রায়ের পক্ষ টেনে সময় মত ওসব সমর্থনের কথা কেন সে বলতে যায়। কতটুকুই বা ক্ষমতা তার উপকার করা বা ক্ষতি করার। সব কিছু ঘটে একরকম তার নাগালের বাইরে, দু’চারটি নোট তার হাতে গুজে দেওয়া হয় সে যাতে কোনো গোলমাল না করে, চুপ করে থাকে। মুখটা বন্ধ করে রাখার পুরস্কার ওটা। কেন তবে সে বাহাদুরী করতে যায় ? টাকার কৃতজ্ঞতায় ? অথবা ওপরওয়ালাকে জানিয়ে দিতে, আমিও আছি। এর মধ্যে, কিন্তু ভয় পাবেন না, আমি আপনার অনুগত, আপনারি পক্ষে ? হয় তো ভালই হয়েছে ফলটা । তাকে যে বিশ্বাস করে ওপর থেকে, তার তো প্ৰমাণই পাওয়া গেল। কিন্তু উপার্জনটা বড় কমে গেছে। এই বিশ্বাসের বোঝায়। এই কাজে এসে উপরি তেমন জুটছে না। আগেকার বাটোয়ারার জের টেনে কিম্বা নায়েবের সঙ্গে এখনো তার খাতির আছে। এইজন্য ভিক্ষার মত কিছু যদি কেউ দেয় । বিশেষ কিন্তু আপসোস হয়নি। শশাঙ্কের। মনটা তার চিরদিনই একটু স্পর্শপ্রবণ ছিল, চারিদিকের আকাশ ছোয়া লোভ ও স্বার্থপরতার চাপে কঠিন হয়ে গেলেও এখনো দুঃখের ছোয়া লেগে তাকে একটু উন্মনা করে দেয় । অন্তরের এই বিলাসিতাটুকু সযত্নে বঁচিয়ে সে পুষে রেখেছে, সময় ও সুযোগ মত উপভোগ করে । চারিদিকে অনাহারে মৃত্যুর তাণ্ডবলীলা চােখে দেখে এবং বর্ণনা শুনে ও পড়ে সে দুঃখিত হতে সাহস পায়নি, নিজেকে উদাসীন করে রেখে দিয়েছে। আনমনা হয়ে মানুষ পুত্ৰশোক ভুলে যেতে পারে, এতো পরের, গরীব দুখীর, না খেয়ে মরার জন্য সমবেদন বোধ করা । এখন আর অতটা মনকে বঁচিয়ে চলাবার দরকার হয় না। শশাঙ্কের, খেতে না পেলে ক্ৰমে ক্রমে নানা বয়সের মানুষের কি অবস্থা হয়, কি অবস্থায় তারা মরে পড়ে থাকে পথের ধারে, এসব এখন সে চোখ মেলে চেয়ে দেখতে পারে, দীর্গনিশ্বাসও ফেলতে পারে । তেত্ৰিশ হাজার মন খাদ্য তার মনে এই জোরের সঞ্চার করছে । এই বিরাট খাদ্যভাণ্ডারের সংস্পর্শে থেকে সে অনুভব করে, আর ভাবনা নেই, না খেয়ে এবার আর মরবে না কেউ এ শহরে বা আশেপাশের গ্রামে । কে পেট ভরে খেল। কার আধ পেট জুটল সে হিসেব চুলোয় যাক, না খেয়ে কেউ আর মারবে না। এত খাদ্য থাকতে টিনের ফুটো আর ফঁাক দিয়ে খাদ্যের গন্ধ প্ৰতিদিন নাকে এসে লাগে শশাঙ্কের,