(R8 মানিক গ্রন্থাবলী ব্যবস্থা, গ্ৰাম মৈত্রী সঙ্ঘ গড়ে তোলার ফলে আরও সহজ হয়ে গেছে। সভেম্বর একটা নিয়ম- দরকার হলে এক গ্রামের লোক অন্য গ্রামের লোককে আশ্ৰয় দেবে, নিজেদের বেশী অসুবিধা না ঘটিয়ে যত লোককে আশ্ৰয় দেওয়া যায় । দরকার হলে, সত্যিসত্যি দরকার হলে অবশ্য । মনে কৱ তোমার বাড়ীতে একখানা বাড়তি ঘর আছে, দরকার হলেই ঘরখানা তুমি শু্যামপুরের একটি পরিবারকে ছেড়ে দিয়ে তাদের সুখ সুবিধার ব্যবস্থা করে দেবে। মনে করবে বাড়ীতে তোমার কোন আত্মীয় এসেছে। কোন গ্রামে কত বাড়তি লােক গিয়ে আশ্রয় নিতে পারে তার মােটামুটি একটা হিসেব আমরা করে রেখেছি। সেই হিসেব মত এক গ্রামের লোককে সরিয়ে অন্য গ্রামে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যদি দরকার হয়-সত্যিসত্যি যদি দরকার হয় । হুবর্ণ। তোমার মাথা খারাপ হয়েছে। জানা নেই শোনা নেই কারা কোথা থেকে এসে হাজির হবে, তাদের কুটুমের মত আদর করে বাড়ীতে রাখতে হবে } এ ব্যবস্থায় কেউ রাজী হবে না । ছোটলাল । সজোঘ এখন তেরটিা গ্ৰাম, প্ৰত্যেক গ্রামের লোক এ ব্যবস্থা মেনে নিয়েছে। খুব খুলী হয়ে মেনে নিয়েছে, মেনে স্বস্তি বোধ করছে। আশ্রয় দেওয়ার প্রশ্ন তো শুধু নয়, পাওয়ার প্রশ্নও আছে কিনা। যারা হয় তো বাড়ীঘর ছেড়ে শেষ পৰ্যন্ত পালাবে না, তারাও চায় যে দরকার , হলে বাচ্চাকাচ্চ নিয়ে মা বৌ আর বোন যাতে সঙ্গে সঙ্গে একটা নিরাপদ স্থানে চলে যেতে পারে তার একটা ব্যবস্থা থাক। বহু বড়লোকে দূরে পশ্চিমে বাড়ী ভাড়া করে রেখে মাসে মাসে ভাড়া গুণে চলেছে, গরীবের কি ইচ্ছা! হয় না তারও ও রকম একটা যাওয়ার যায়গা থাকে ? আমাদের ওই রকম একটা যাবার যায়গার ব্যবস্থা সকলের জন্য করা হয়েছে । সকলে তাই আগ্রহের সঙ্গে ব্যবস্থাটা বরণ করে নিয়েছে। যে গায়ে হানা দিচ্ছে সে গ ছেড়ে পালাবার হিড়িক উঠেছিল, সে ঝোঁক লোকের কিছুতেই যেন কমানো যাবে না মনে হয়েছিল। এই ব্যবস্থার কথা জানিবার পর সকলে আশ্চৰ্য রকম শাস্তু হয়ে গেছে। তাদের বলা হয়েছে, ঘরবাড়ী ফেলে কেউ পালিও না। তার কোন দরকার নেই। যদি দরকার হয় আমরাই তোমাদের নিরাপদ স্থানে রেখে আসব। সাত মাইল দূরে এক গ্রামে পালাতে চাইছ সেখানে জলের অভাব থআর কলেৱার প্রকোপ, আমরা
পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৬৩০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।