পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

0. মানিক গ্ৰন্থাবলী চোখে পড়ে-মানুষ ও গরু ছাগল, ঘোষেদের কেলো কুকুরটা মরে পড়ে আছে আস্তাকুঁড়ের ধারে। চাঁদকাকা আর কালাটাদের শূন্য ভিটে খা খাঁ করছে। চারিদিকের প্রাণহীন স্তব্ধতায় নিজেকে গৌরের আরও বেশী এক, আরও বেশী অসহায় মনে হয় । মনে হয় চিন্তামণির সঙ্গে যদি ভাব রাখত! প্ৰাণ খুলে মনের দুটো' কথা কয়ে নিজেকে হাল্কা করা যেত একটু। আজ তিন চার মাস চিন্তামণির সঙ্গে সে দেখা করেনি, কথা কয়নি। রঘু আজ যে ভাবে বর্জন করেছে তাকে, একরকম এমনি ভাবেই সেও সম্পর্ক তুলে দিয়েছিল চিন্তামণির সঙ্গে। অবশ্য পৈছেটা সে দিয়েছিল চিন্তামণিকে—দামী ভারী একটা পৈছে! সে চাওয়ার আগেই রঘু তাকে জানিয়ে দিয়েছে ধান সে তাকে দিতে পারবে না । কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দেওয়ার মত সেই সঙ্গে ধার দেওয়া ধান শোধ চাইতেও তার বাধে নি। আচ্ছা, চিন্তামণির কাছে যদি পৈছেট ফেরত চায় ? যদি বলে যে এখনকার মত ওটা ফেরত দাও, সুদিন ফিরে এলে আবার তোমায় নতুন পৈছে গড়িয়ে দেব ? বিয়ে করে ঘর সংসার করার সাধ মেটাবে বলে যাকে সে ত্যাগ করেছে, এতকাল একটা খবরও নেয়নি যে বঁাচল না মরল, তার কাছে পৈছে ফেরত চাওয়ার কথা ভাবতে গৌরের লজ্জা বোধ হয় না। বরং রঘুর কাছে ধান চাইতে যাওয়ার চেয়ে একাজটা বরং ঢের বেশী সহজ ও স্বাভাবিক বলে মনে হয় । এমন কি, পৈছে দিতে চিন্তামণি যে অস্বীকার করতে পারে এটা তার খেয়ালও হয় না। একবারের জন্য । তারা যেন দাবী আছে পৈছেটাতে এবং চাইলেই যেন চিন্তামণি বিনা দ্বিধায় সেটা তাকে ফিরিয়ে দেবে। এতে সন্দেহের অবকাশ নেই। এতটুকু। অসঙ্গতিও নেই। চিন্তামণির সঙ্গে ভাব হবার পর আজ প্ৰথম প্ৰকাশ্য দিবালোকে গৌর তার সঙ্গে দেখা করতে যায়। এমন সে মরিয়া হয়ে উঠেছে যে বাবুদের বাড়ীর খিড়কির দরজায় দাড়িয়ে বাবুৱা মেয়েটাকেই অনুরোধ জানায় চিন্তামণিকে ডেকে দিতে। চিন্তামণি আসে। অনেক দেরী করে। একটু রোগ হয়ে গেছে চিন্তামণি । রোগী হওয়ায় আরও যেন সুন্দর দেখাচ্ছে তাকে, কম মনে হচ্ছে বয়সী। চিন্তামণি এসে গৌর মুখ খুলবার আগেই প্ৰায় রুদ্ধশ্বাসে বলে, “বেশ করেছ। এসেছী। তোমায় খুজছিলাম। ক’দিন থেকে। তোমার গয়না ফিরিয়ে নিয়ে যাও।” চিন্তামণি পৈছেটা গৌরের হাতে তুলে দেয়। 'किटिन्न छि ? cकन किब्रिएन्न छि ?'