পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ष्श्रूिं try কত চেষ্টায় স্থা গলা কঁাপিতে দেননি, সহজভাবে কথা বলেছেন, বুঝতে পেরেছিল। হেমন্ত । ‘এই বেরোেব এবার। জল দাও তো একটু।” হেমন্ত জল খেয়ে গেলাস নামিয়ে রাখার পরেও মা সোজা-সুজি সিগারেটের কথা তুলতে পারেনি। জিজ্ঞেস করার অদম্য ইচ্ছা জোর করে চেপে রেখেছিলেন হেমন্ত কি জবাব দেবে এই ভয়ে । যদি সে বলে বসে, হঁ্যা, সিগারেট সে ধরেছে ! যদি সে রাগ করে সামান্য সিগারেট খাওয়া নিয়ে পর্যন্ত র্তার খোঁচাখেচানিতে,- তার বয়সের কোন ছেলেটা না সিগারেট খায় ? মাের ভীরু করুণ দৃষ্টি শুধু বার বার গিয়ে পড়ছিল। ঘরের কোনায় জলন্ত সিগারেটটার দিকে, হেমন্তের মুখে বুলিয়ে নিয়েই চোখ নত করছিলেন । তারপর হঠাৎ সেই চোখ ভরে গিয়েছিল জলে । হেমন্ত তখন ব্যস্ত হয়ে বলেছিল, “কঁদতে আরম্ভ করে দিলে মা ? সিগারেট আমি খাই না, তোমার ভাবনা নেই । পঙ্কজ একটা সিগারেট দিয়েছিল, হঠাৎ কি সখা হল, ধরিয়েছিলাম । খেতে পারিনি, তাই ফেলে দিয়েছি।” ‘ওঃ !” বলে মা নিশ্চিন্ত হয়ে মুখে হাসি ফুটিয়েছিলেন, বলেছিলেন, ‘কেন কেঁদেছি শুনিবি হেমা ? তুই সিগারেট খাস ভেবে নয়, আমায় লুকিয়ে খাস ভেবে, খাওয়া অন্যায় জেনে খাস ভেবে। আমি মনে করলাম, আমায় আসতে দেখে তুই তাড়াতাড়ি সিগারেটটা ফেলে দিয়েছিস । নইলে সিগারেট খাওয়া দোষের নয় বুঝে তুই যদি খাস হেমা, খেতে ইচ্ছা হলে—” আঁচল দিয়ে চোখের জলের সঙ্গে মুখের হাসিটুকুও যেন মা মুছে নিয়েছিলেন। “এখন আর ভাবনার কিছু নেই তো ?’ “এমনি করেই কিন্তু হ্যাবিট জন্মায় হেমা, ইচ্ছা না থাকলেও ।” মার কথা ভেবে মায়া বোধ করে হেমন্ত, কিন্তু কেমন এক বৈরাগ্য মিশে সে মায়াবোধের ব্যাকুলতা আর উদ্বেগকে নিরস্ত করেছে এখন। মাকে মনে হচ্ছে দূরে, বহু দূরে। এখান থেকে ট্রামে বাড়ি যেতে সময় লাগে মোটে মিনিট পনের, সেখানে মা হয় তো আকুল হয়ে আছেন তার জন্য, কিন্তু বিরাট এক বাস্তব সত্য যেন দুস্তর ব্যবধান রচনা করে দিয়েছে রাজপথের এই শক্ত ফুটপাথ আর মায়ের অগাধ স্নেহ, অসীম শুভ কামনা অনন্ত দুর্ভাবনা ভরা সেই নীড়ের মাঝখানে, শান্তি আর যুদ্ধের সময়কার জগতের মতো অতি ঘনিষ্ঠ অথচ অসীম দূরত্ব ও পার্থক্যের ব্যবধান। ه --(| وه ) چsif