পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

berg মানিক গ্ৰন্থাবলী পাশের ছেলেটি বলছিল : “কি সুন্দর ঘোড়াগুলি! তালে তালে পা ফেলছে আর মাসেলগুলিতে যেন ঢেউ খেলছে নেচে নেচে ।” বয়স তার পনের-ষোল বছরের বেশী হবে না। রোগা চেহারা, ফর্স রঙ, খুব ঢ্যাঙা । আলোয়ানটা এমন করে গায়ে জড়িয়েছে আরাম করার ভঙ্গিতে যেন আসরে বসেছে গান-বাজনা শুনে বা সিনেমা-থিয়েটার দেখে উপভোগ করতে । “কত তোয়াজে থাকে।” বলেছিল চশমা-পরা যুবকটি গম্ভীর ভাবে। তার উৎসুক দৃষ্টি ক্রমাগত সঞ্চালিত হচ্ছিল এদিক হতে। ওদিকে, মনে মনে সে যেন মাপছে ওজন করছে হিসাব কষছে। যাচাই করছে ছোট-বড় ঘটনা ও পরিস্থিতির বিশেষ এক মূল্য। “এমন ইচ্ছে করছিল ঘোড়ার গা চাপড়ে দিতে !” ঢ্যাঙা ছেলেটি বলেছিল নিবিকার ভাবে, “মাথাটা বোধ হয়। ফাটিয়ে দিত তা হলে ।” দিত কি ? একটা কেমন খটকা লেগেছিল নারায়ণের মনে । তাদের কাছ দিয়ে যে ঘোড়াটি ঘুরে গেছে, ওর ছেলেমানুষী চোখ দেখেছে তার মসৃণ চামড়ার নীচে পরিপুষ্ট মাসেলের নাচ, নারায়ণের চোখ দেখেছে পাগড়ী-আঁটা বিশাল গোফওলা অতি জবরদস্ত চেহারার ভারতীয় সওয়ারটির ঘোড়া চালাবার কায়দার মধ্যে অনিচ্ছার সংকেত, দ্বিধা, গোপন সতর্কতা । খেলার মাঠে এদের বেপরোয়া ঘোড়া চালানো দেখেছে নারায়ণ অনেকবার। আজকের চালানোটাই যেন অন্য রকম । 影 সত্যই কি দেখেছে, না। সবটাই তার কল্পনা ? অথবা এই রকমই ওদের রাজপথের জনতা ছত্ৰভঙ্গ করার রীতি ? রীতি যাই হোক, জখম হয়েছে অনেক । 'छेन्!' হাঁটুতে ভর দিয়ে মাথা উঁচু করে ঢাঙা ছেলেটি বিস্ফারিত চােখে চেয়ে আছে। নারায়ণও চেয়ে থাকে। রাস্তায় শুয়ে পড়ে মোচড়-মুচড়ি দিচ্ছে একটি আহত ছেলে । আগুনের হালকা যেন বেরোয় নারায়ণের দু'চোখ দিয়ে, অসহ জালা যেন কথার রূপ নেয়, “ওই টুপিওলাটার কাজ, টেনে নামিয়ে ছিড়ে খণ্ড খণ্ড করে

  • ফেললে তবে ঠিক হয়। বসে আছে সব হাত গুটিয়ে। সবাই মিলে টেনে নামিয়ে

ছিড়ে খণ্ড খণ্ড করে ফেললে-”