পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

फ्रिश्रू V মহাপুরুষের কিছুমাত্র ভয় হয় না জানা নেই রাসুলের । তার বেশ ভয় করে, বেশ জোর করেই ভয়ট বশে রাখতে হয় তাকে । ভয় তাকে কাবু করতে পারেনি কোন দিন কোন অবস্থাতে এইটুকু সে সত্য বলে জানে, ভয় তার একেবারে হয় না। এ মিথ্যাকে স্বীকার করতে লজ্জা তার হয় । নিজের কাছে বা পরের কাছে এর বেশী বাহাদুরী দেখাবার সাধ তার নেই, এইটুকুতেই সে সন্তুষ্ট। আজ ভয় ভাবনা বেশী রকম ক্ষীণ লাগিছিল তার কাছে, বেপরোয় সাহসের সঙ্গে নতুন একটা বিশ্বাসের নিৰ্ভয়ের ভাব অনুভব করছিল ৷ আবদুলের কথায় তার কাছে স্পষ্ট হয়েছে আবদুল ও তার সম অনুভূতি : সে এক নয়। আঘাতের বেদনা বা মৃত্যুর সমাপ্তি অনেকের মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে যাবে । লাঠি চার্জ শুরু হয়। খানিক পরে । এ পরিচিত ঘটনা রসুলের । বিশৃংখলা কোলাহল, মানুষের দিশেহারা ছুটোছুটির মধ্যেও সে অনুভব করে লাঠি চার্জের উদ্দেশ্য সফল হবে না নিরস্তু কতগুলি যুবক ও বালক জখম হওয়া ছাড়া । যারা নড়বে না ঠিক করেছে তাদের হঠানো যাবে না ? দু’জন পুলিস এগিয়ে এসেছে কাছাকাছি । বেছে নেবার সময় ওদের নেই, এ ক্ষেত্রে সবাই সমানও বটে । রসুল পলকহীন চোখে তাকিয়ে থাকে ডান দিকের পুলিসটির দিকে। ওদের সকলের মুখ তার চেনা মনে হয়, সবগুলি মুখ যেন এক ছাচে গড়া । মাথা বাঁচাবার জন্য হাত দু’টি সে উঁচু করে ধরে। লাঠি এসে পড়ে কঁাধের কাছে, কাহুমূলে— লাঠির গোড়ার দিকটা । লাঠি ধরে ছিল যে হাত, সে-হাত ইচ্ছে করে লাঠি তাকে মারে আগা দিয়ে নয়, মাঝখান দিয়ে নয়, গোড়ার দিক দিয়ে। ব্যথা একটু লাগে, কিন্তু রসুল তা অনুভবও করতে পারে না তার চোখ ছিল। লাল-পাগড়ীর নীচেকার মুখটিতে আঁটা । সে স্পষ্ট দেখতে পায় লাঠি মারার সঙ্গে মুখটি তার দিকে চোখ ঠেরে চলে গেল । “আবদুল ! দেখেছিস ? ‘হু’। লেগেছে খুব ? হাড় ভাঙেনি তো ? ‘লাগেনি। একটুও লাগেনি!! দেখিসনি তুই ? ‘কি ? কি দেখিনি ? চোখের পলকের ঘটনা, কি দেখতে কি দেখেছে কে জানে! লাঠির গোড়ার দিকটা হয়তো এসে লেগেছে ঘটনাচক্রে । তবু রাজপথে বসে মনে মনে আকাশপাতাল আউড়ে যায় রসুল সে যেন মুক্তি পেয়েছে, স্বাধীন হয়ে গেছে দেশের