পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী মত হাতকাটা জামা-সর্বদা ও সর্বত্র এই রকম জামাই সে পরে। এও একটা দুর্বলতা বৈকি। সাধারণ সার্ট পাঞ্জাবীর চেয়ে এই জামাতে যে তাকে ভাল মানায়, বেশ দেখায় তাকে এই জামা পরলে, লোকের ধারণা হয়। সে বিলাসিতাবিমুখ ফ্যাশন-বিদ্রোহী সহজ মানুষ, ব্যক্তিত্ব-সম্পন্ন মানুষ, আনমনে সে নিজেই তা জানে। চওড়া কপালের দুটি প্রান্তের বঁাক তার সুডৌল, বড় বড় চুলে টেরি না। কেটে সে তাই সোজাসুজি পিছনে ঠেলে চুল আঁচড়ায়। লম্বাটে চিবুক, খাড়া নাক দিব্যি মানানসই, কিন্তু বড় বড় ভাসা ভাস। চোখ দুটি অত্যন্ত খাপছাড়া দেখায়। এদিকে দম নিতে নিতে কি হয় মমতার, হুস করে সে ফুপিয়ে কেঁদে ওঠে আর নিজের অনভ্যস্ত কান্নায় নিজেই কেমন ভড়কে গিয়ে মুখে হাত চাপা দিয়ে সেটা থামাতে চেষ্টা করে । হাতের চাপেই কান্নাটা যেন থামে। অল্পক্ষণের মধ্যেই সে শান্ত হয় । বলে, “এটা কি হল ?” কৃষ্ণেন্দু বলে, “একটু কঁদিলে, আর কিছু নয়। চাপা না দিয়ে প্রাণভরে কেঁদে নিলে পারতে মমু।” মমতা আর একবার চোখ মুছে বলে, “না। আর দরকার নেই। আমারও কেমন অস্বস্তি হচ্ছিল, কি যেন হওয়া উচিত, হচ্ছেনা, জোলাপ নেবার পর যেমন হয়।” বলে’ গম্ভীর হয়। মমতা । গুরুতর কথা গম্ভীর না হয়ে বলা যায় না, বলা উচিতও নয়।-“শোন । ভয়ানক কাণ্ড হয়ে গেছে। হীরেন। আমায় ত্যাগ করেছে। মানে, ও আমায় ত্যাগ করেছে, আমি ও ওকে ত্যাগ কবেছি। আমাদের বনল না ।” কৃষ্ণেন্দু বলতে যায়, ‘প্রথম কলহ হলে--” মমতা প্ৰায় ধমক দিয়ে বলে, “চুপ কর। দাম্পত্য কলহ কাকে বলে আমি জানি। এ তা নয়। তোমার কথাই ঠিক হল কেষ্টদা। ওকে গড়ে নিতে পারলাম না, আরও বিগড়ে গেল। মানুষ ভেবেছিলাম। ওকে, বেরিয়ে পড়লো, অমানুষ।” ‘ওতো অমানুষ নয় ?” ‘নয় ? শোন। তবে ।” অনেক সময় লাগে বলতে । অতি বোধগম্য কথাও বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে না দিলে কি কৃষ্ণেন্দু বুঝতে পারবে। কনক ধৈৰ্য হারিয়ে বার বার এসে SS 8