পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শুধু তারই প্রভাবের প্রতিক্রিয়া। ওর জগতের অন্য যে কোন মেয়ে এভাবে তার সংস্পর্শে এলে মমতার মত হতে পারত সিগারেট ছুড়ে ফেলে হাকিমের রায় দেওয়ার সুরে কৃষ্ণেন্দু বলে, “বেশ। কাল সুপ্ৰভা চাটগা যাবে। তুমিও ওর সঙ্গে যেও।” কিন্তু বিছানায় শুয়ে এপােশ ওপাশ করতে করতে ধাতস্থ হয়ে কৃষ্ণেন্দু মত বদলায়। নিজেকে বড় অপদার্থ মনে হয় তার। এত দিন কেটে গেল এত কাজে, এত জ্ঞান আর অভিজ্ঞতা সঞ্চিত হল, এখনো তার এ দুর্বলতা রয়ে গেছে ! কবে আর তবে সে জয় করতে পারবে মনের এই দীনতা ? কবে সংশোধন হবে ? মন যার গড়ে উঠতে সে দেয় নি, কেন সে তার কাছে অসম্ভব প্ৰত্যাশা রাখে, তাকে বিদায় করে হিংস্ৰ সমালোচকের মত ? শাস্তি দিতে, ভেঙ্গে ফেলতে চায় ? অনেকক্ষণ ছটফট করে কৃষ্ণেন্দু, ঘুমায়। নরেশকে যেদিন সে মেরেছিল, সেদিন রাত্রেও বিছানায় শুয়ে সে এমনিভাবেই ছটফট করেছিল । তাই, বাস্তবের কষ্টিপাথরে নিজেকে যাচাই করে নেবার সুযোগ মমতাকে দেওয়া কৃষ্ণেন্দু উচিত বিবেচনা করল বলে, অজানা অচেনা চাটগার বদলে মমতা বাস করতে এল রাস্তাদের বাড়ী । বন্তি তার চেনা, বস্তির মানুষের সঙ্গে তার কারবার ছিল। এদের সঙ্গেই তার আগে ঘনিষ্ঠত হোক । এটা বড়ই বাড়াবাড়ি হল সন্দেহ নেই। কিন্তু বাড়াবাড়িই করতে চাইছিল মমতা। রাতারাতি একটা বিপ্লব না হলে তার চলছিল না-নিজের জীবনে । হীরেনকে তার বুঝিয়ে দিতে হবে তার জীবনে আপোষ নেই, জোড়াতালি সে চায় না । কৃষ্ণেন্দুর কাছেও প্ৰমাণ দিতে হবে প্ৰাসাদের চেয়ে খোলার ঘর তার fအဲချွံ | ‘তুমি মিথ্যে ভাবছ। মিছে তর্ক তুলছ আমার শিক্ষা দীক্ষা সংস্কার রুচি অভ্যাসের । দেখো, সাতদিনের মধ্যে আমি ওদের সঙ্গে একেবারে এক হয়ে যাব।” ‘তা হলে তো মুস্কিল। শেষে তোমায় না ঘণ্টার পর ঘণ্টা বোঝাতে হয়, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার দরকার। গারগড়ালে মাটি উঠবে না তো মমু?” বাড়ীতে ঘর খালি ছিল না একটিও। সুরেশ আর নরেশকে ঘর ছেড়ে দিতে SRV2