পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

၇ကျိရ দিয়ে উচু করা পুরানো যে তক্তাপোষটি ছিল ঘরে, তাতেই পাতা হল বিছানা। দড়ি টাঙ্গিয়ে ঝুলিয়ে রাখার ব্যবস্থা হল কাপড় জমা গামছা । ভুল করে মমতা মস্ত ভারি তোয়ালে এনে বসেছিল, কিন্তু সু্যটকেশ থেকে সেটা বার না করে একটা গামছা কিনে আনিয়ে ভুলটা সে সংশোধন করে নিল সঙ্গে সঙ্গে। আসবাবের অভাবের দিক দিয়ে একটু বাড়াবাড়ি হল মমতার। রাস্তার ঘরে, দুর্গার ঘরে, গোপালের ঘরে কাঠের আনিলা আছে, দু’একটা চেয়ার আছে কাঠ আর লোহার, টেবিলও যে নেই কেরোসিন কাঠের তাও নয় । কোথায় খাবে মমতা ? কি খাবে ? রম্ভার সংসারে, তারা যা খায় । সকালে পৌছেই কথাটা খোলসা করে নিল মমতা ৷-“শোন বলি, দুজনে আমরা ভাগাভাগি করে রাধবা। তোমরা যা খাচ্ছি। আমিও তাই খাব, বেশী কিছু আয়োজন করতে পাবে না। আমার জন্যে । আমি খাব বলে যদি একটা পদ ও বেশী রান্না করি ভাই, ভারি রাগ করব। কিন্তু বলে রাখছি।” “কি করে জানবেন আমরা কি খাই, কি খাওয়াই আপনাকে ? “সে আমি টের পাব। তুমি বলতে বললাম যে আমাকে ? “বলব—বলব। অভ্যোস কি সহজে কাটান যায় ? কিন্তু এত কষ্ট করবেন। কেন ? নিজের পয়সায় খাবেন যখন, ভাল জিনিস খাবেন । আমাদের খাওয়া আপনার সইবে কেন ?? ‘সইবে। যত ভাবিছ, অত দুধ ঘি পোলাও খাই না। আমি। শাক চচ্চড়ি খেতে জানি ।” কিন্তু আসবাবহীন সোদাগান্ধী আধো-আঁধার ঘরে তক্তাপোষে বিছানা পেতে দড়িতে কাপড় ঝলিয়ে শাকচচ্চড়ি খেয়ে থাকবার জন্য প্ৰস্তুত হয়ে এলেও সকলের খাপছাড়া অভ্যর্থনা তাকে অপ্ৰস্তুত করে দিল । কাল এ বাড়ীতে আসামাত্র সকলে সামনে এসে দাড়িয়েছিল, মৃদু উত্তেজনা, হাসি মুখ আর নিরীহ সম্মানসূচক ভঙ্গি দিয়ে নীরব অভ্যর্থনা জানিয়েছিল : এসেছেন ? আমরা খুশী হয়েছি! আজি সে ভাবে সবাই তো এল না। রম্ভ, দুৰ্গা, নরেশ, রামপাল এর কজন মাত্র এল। চৌকাঠ ডিঙ্গোবার সময় ভিতর থেকে কলরব কানে এসেছিল, ভিতরে ঢোকা মাত্র সে কলরব হঠাৎ গিয়েছিল স্তব্ধ হয়ে। তার আবির্ভাব যে সবাই শুধু টের পেয়েছে তা নয়, মমতা বুঝতে পেরেছিল, সবাই রীতিমত প্ৰতীক্ষা করছিল। কখন SRG