পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ဓုကျိရ শঙ্কিত দৃষ্টিতে কৃষ্ণেন্দু হীরেনের দিকে তাকিয়ে থাকে। এত দেরী করে কেন রাস্কেলটা, ওকি ওসমানের কথার জবাব দেনে না ? যদি ও তুমি বলে বসে ওসমানকে ! হীরেন কেমন অন্যমনস্ক হয়ে গিয়েছিল, হঠাৎ সে যেন সচেতন হয়ে উঠল। বলল, “ভালই আছি। আপনার খবর ভাল ? চোখের পলকে ওসমানের মুখের ভাব বদলে গেল। খুশী হয়ে তার মধুর গম্ভীর আওয়াজে সে বলল, “চলছে একরকম। আপনি যে গরীবের বাড়ী পায়ের ধুলো দেবেন—” হীরেন আর টানতে পারল না, ক্লিষ্টভাবে একটু হেসে সংক্ষেপে শুধু বলল, “বলেন কি !” কৃষ্ণেন্দুর ওপর রাগে তার গা জলে যাচ্ছিল। মমতা ফিরে আসবার পর থেকে হীরেন যেচে কৃষ্ণেন্দুর সঙ্গে অনেক জায়গায় গিয়েছে, কুলিমজুরদের আরেকটু ঘনিষ্ঠভাবে জানিবার জন্যে। তার এই পরাজয়ের উদারতায় মমতা যদি খুলী হয় এই উদ্দেশ্যে। কিন্তু সে আলাদা ব্যাপার। ওসমান তো গরীব নয়, কথায় ভুলিয়ে ফাকি দিয়ে এখানে কৃষ্ণেন্দু কি বলে তাকে নিয়ে এল ? তারপর তারই সামনে ওসমানের সঙ্গে কৃষ্ণেন্দু যখন কারখানার গণ্ডগোলের বিষয় আলোচনা শুরু করল, রাগে হীরেনের রক্তে যেন আগুন ধরে গেল একেবারে। কয়েক মুহুর্তের জন্য একথা পর্যন্ত তার মনে হল যে, কৃষ্ণেন্দু তার বন্ধু নয়, আর দশটি বড়লোকের ছেলের মত তাকেও কৃষ্ণেন্দু ঘৃণা কবে, তাকে নিয়ে এই রকম মজা করার জন্যই সে বন্ধুত্বেব ভাণটা বজায় রেখে চলে তায় সঙ্গে । লোকনাথকে যেমন বলেছিল, ওসমানকেও তেমনি ভাবেই কৃষ্ণেন্দু বলল, “আপনি বড় অন্যায় করেছেন, আলি সা’ব । এত হাঙ্গামা করবার কি দরকার ছিল আপনার ? আপনার কদর ওরা বুঝল না, আপনি কাজ ছেড়ে দিলেন, হাঙ্গামা চুকে গেল। আপনার কি কাজের অভাব হত কিছু ? বেলেঘাটার বসাকবাবু আজ গেলে কাল আপনাকে কাজে লাগিয়ে দেবে। মা’বুব, আজিজ, আমিরুদ্দীন, এদের নিয়ে ঘোট পাকাতে গেলেন কি বলে ?” ওসমান মুখ অন্ধকার করে বলল, “কেষ্টবাবু, আপনি যদি বলেন আমি মুছলমান ওরাও মুছলমান, তাই ওদের বেছে নিয়ে ঘোট পাকিয়েছি—” “তা জানি। অন্য সবাই এলে তাদের নিয়েও ঘোট পাকাতেন, তারা Ꭹ 8 Ꮔ