পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে অনুভব করে না । কেবল এই এক বিষয়ে নয়, বেশ খানিকটা পিতৃভক্তি থাকলেও বাপের সঙ্গে তার তেমন বনে না । ভক্তির সঙ্গে মনের মধ্যে একটা সমালোচনার ভাব থাকাটা তার কারণ। বােপকে সে পুরোপুরি অনুমোদন করতে পারে না । প্রচুর বাৎসল্য থাকা সত্ত্বেও লোকনাথের মনেও ছেলের সম্বন্ধে পুরাপুরি সায় নেই। তবে মতানৈক্য থাকলেও বাপ ছেলের মধ্যে এপৰ্য্যন্ত তেমন মনোমালিন্য ঘটেনি। অমিলের মধ্যেও মিল থাকায় খানিকটা সামঞ্জস্য হয়েছে, মতামত ও পছন্দ অপছন্দের অতীত পিতৃভক্তি আর বাৎসল্য বাকীটা সামলে রেখেছে । সম্প্রতি উমাপদকে উপলক্ষ করে দু’জনের মধ্যে খাটি একটা মনোমালিন্য ঘটবার উপক্রম দেখা দিয়েছে । কাঠের কারখানায় গোলমাল হবার আগে থেকেই উমাপদর ক্ষমতার অপব্যবহারের কথা তার কাণে আসছিল ; একটা কিছু ব্যবস্থা করার জন্য চাপও পড়ছিল তার উপর। চাপ দিচ্ছিল। কৃষ্ণেন্দু আর মমতা । দু’জনের মধ্যে যে কোন একজনের বলাটাই হীরেনের পক্ষে যথেষ্ট ছিল। এদের দু’জনের চাপের সঙ্গে তার নিজের মনের সঙ্গীত ঘটায় ব্যাপারটা গুরুত্ব পেয়েছে অনেক বেশী । উমাপদকে সে পছন্দ করে না । কেবল অপছন্দ নয়, এই পিসতুতো দাদাটির উপর তার মনে একটা ঘূণা ও বিদ্বেষের ভাবও বহুদিন থেকে সঞ্চারিত হয়ে এসেছে । বাড়ীর মানুষগুলির অমাজ্জিত স্থূল মানসিকতা সে শুধু অবজ্ঞা আর উদাসীনতা দিয়ে বরদাস্ত করে যায়, তার আগেকার যুগের মানুষ বলে ক্ষমা করে কিন্তু প্ৰায় সমবয়সী। ও সুশিক্ষিত উমাপদর রুচিহীন কৃষ্টিহীন ভোতা অনুদার জীবনযাপন তাকে পীড়ন করে । কিন্তু মুখে উপদেশ বা ধমক দিতে লোকনাথের আপত্তি না থাকলেও উমাপদর স্বভাবের সংশোধন হওয়ার মত শাসন করতে লোকনাথ রাজী নন। উমাপদর ব্যবহারে তিনি দোষের বিশেষ কিছু দেখতে পান না বলে শুধু নয়, তাকে শাসন করার একটু মুস্কিলও আছে। জীবন-বীমার কোম্পানী খুলে লোকনাথ প্ৰথম ব্যবসায় জীবন আরম্ভ করেন তঁর ভক্ষ্মীপতি রাখালের সঙ্গে, উমাপদ যার ছেলে। সে কোম্পানীর অৰ্দ্ধেক অংশীদার ছিল রাখাল । কোম্পানী যখন দাড়িয়ে গিয়ে দিন দিন বড় হচ্ছে এবং পরামর্শ চলছে। অন্য কারবার পত্তন করবার তখন রাখাল S (c) R