পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ဓုကျိရ “গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে, দয়া করে গা তুলুন।' আগে থেকে অনুমান করে টাকা কৃষ্ণেন্দু সঙ্গে নিয়ে যায়, বন্ধুকে নিয়ে চলে আসবার আগে সব দেন। সে মিটিয়ে দেয়। টাকা সে পরে হীরেনের কাছ থেকে আদায় করে নেবে, নিজের কাজে তার অনেক টাকা দরকার, মদের দাম মিটিয়ে সে টাকা চেয়ে নিতে ভুলে যাওয়ার মত খাতির এ জগতে কারে সঙ্গে তার নেই। বেঁটে ফন্স নিরীহ লোকটি আসে, টাকা বুঝে নিয়ে চলে যায়। ক্লষ্ণেন্দু মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করে; “তোমায় কত দেব ভাই ? মেয়েটি বলে, “যা খুলী দিন ।” হীরেন হয়তো এতক্ষণ চোখ বুজে থাকে, কৃষ্ণেন্দু কাকে কত দিচ্ছে সে বিষয়ে তার কিছুমাত্ৰ মনোযোগ আছে মনে হয় না। এইবার হঠাৎ সে সজাগ হয়ে ওঠে। “আজি কি বার ?” “বুধবার “আরেক মঙ্গলবার এসেছিলাম। আজ ধরে ন’দিন। প্ৰথম দিন ত্ৰিশ টাকা, তারপর পাঁচিশ টাকা করে। ওকে দুশো ত্ৰিশ টাকা দে।” মুখ কালো করে কৃষ্ণেন্দুর দিকে চেয়ে মেয়েটি বলে, “দেখলেন ?? হীরেন বলে, “দেখলেন কি ? যা কথা হয়েছে তোমার সঙ্গে তাই দেওয়া হচ্ছে। এক পয়স কম দিচ্ছি যে ওকে সাক্ষী মানছ ? কৃষ্ণেন্দু নি:শব্দে দুশো ত্ৰিশ টাকা গুণে মেয়েটির হাতে দেয়। নোটগুলি হাতে নিয়ে ভয় বিস্ময় ও বিদ্বেষ মেশানো এক অদ্ভুত দৃষ্টিতে মেয়েটি তাকিয়ে থাকে হীরেনের দিকে । হীরেনকে ট্যাক্সিতে বসিয়ে কৃষ্ণেন্দু হঠাৎ একবার নেমে যায়। চট করে বাড়ীর ভেতর গিয়ে কতকগুলি নোট মেয়েটির হাতে গুজে দিয়ে বেরিয়ে আসে। হীরেন সন্দিগ্ধ মনে বলে, “তুই ওকে টাকা দিয়ে এলি ইন্দু।” কৃষ্ণেন্দু বলে, “না। কিছু ফেলে এসেছিস কিনা দেখে এলাম।” এতক্ষণ পরে তাকে ভয়ানক গম্ভীর দেখায়। হীরেন আজে বাজে কথা বলে, সে গুম খেয়ে থাকে। বাড়ীর কাছাকাছি গিয়ে কৃষ্ণেন্দু বলে, “টাকা দেবার জন্যে,কিছু গেলে এসেছ কিনা দেখবার জন্যে, তোকে আর ফিরে যেতে হবে না। মনে থাকবে ?” তখন হীরেন। কাতরভাবে তার চিরন্তন কৈফিয়ত জানায়। বলে, “ঘরে বাইরে এত অশান্তি আমার সয় না। ইন্দু।” S ! Gd