পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কয়েকটি ছোট বড় হাঙ্গামার ব্যাপার নিয়ে কৃষ্ণেন্দু বিব্রত হয়ে ছিল। সবগুলিই শ্রমিক সংক্রান্ত ব্যাপার। এক সময়ে ছোট বড় এতগুলি ভিন্ন ভিন্ন কল কারখানায় এত বিভিন্ন কারণে গোলমাল শুরু হতে সে কখনো দ্যাখে ৷৷ নতুন চেতনার লক্ষণ আবিষ্কার করে পুলকিত হবার চেষ্টা তার ব্যর্থ হয়ে যায়। চেতনা কই ? জোরালো একটা অসন্তোষ সাড়া দিচ্ছে, রূপ নিচ্ছে, এইটুকু শুধু সে অনুভব করতে পারে। অধিকারের দাবী কেউ তুলছে না। কয়েকটা অন্যায় ও অবিচারের প্রতিকার শুধু চাইছে। তাও আবার পুরোপুরি নিজেদের ভেতরকার তাগিদে নয় ! অনেক সজন্য ও সমিতি তাদের ব্যাপারে কৃষ্ণেন্দুর হস্তক্ষেপ পছন্দ করে না। চেষ্টা করেও কৃষ্ণেন্দু সেখানে আমল পায় না। “এই নিয়ে ধর্মঘট করবেন না। অনর্থক শক্তি ক্ষয় হবে।” কৃষ্ণেন্দু বলে। “আপনি ওসব বুঝবেন না।” বলে খদ্দর পরিহিত সোণার চশমা লাগানো ফ্রেঞ্চ কাটি দাড়িযুক্ত সমিতি। ‘বুঝব বৈকি। কাল পরশু শুরু করে দিন সাতেক ভূঁইক চালাতে পারলে ফণ্ডে কিছু টাকা আসবে।” “তবে তো বুঝতেই পারছেন। টাকা সম্পর্কে আপনার মত জানি না, আমরা টাকাটা খুব দরকারী মনে করি। আমরা দেখেছি, টাকা দিয়ে এদের যত ভাল করা যায়, বক্তৃতা দিয়ে উপদেশ শুনিয়ে তার সিকিও হয় না। প্রোপাগাণ্ডার পেছনেও আমরা টাকা খরচ করি না যে তা নয়।” “চিন্তামণি মিল কি খুব বেশী টাকা দেবে? “মন্দ দেবে না। তাই বা পাচ্ছি কোথা বলুন ? “কিন্তু এরা যদি অর্ডারটা না পায়-স্ট্রাইক সুরু হলে পাবেও না-এদের অবস্থাটা কি দাড়াবে ভেবেছেন কি ? এদের কাজ কমিয়ে ফেলতে হবে। বহু লোককে ছাড়িয়ে দেবে।’ ‘তেমনি চিন্তামণি যদি অর্ডারটা পায়, ওদের কাজ বাড়াতে হবে । বহু লোকও নেবে। ” SVe