পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

tr†ဍ রামপাল তাকে হঠাৎ সজোরে বুকে চেপে ধরল। আবেগে অথবা ঘুম ভাঙ্গানোর রাগে বুঝতে না পেরে রম্ভ একটু ভয় পেয়ে গেল, আলিঙ্গনে দম আটকে আসায় কান্নাও বন্ধ হয়ে গেল আচমকা । ‘এখন তক্‌ কঁদেছিস সোণা ? আহা রে । চুক চুক।” ‘মুই সইতে লারছি গো, সইতে লারছি।” ‘চুক চুক।” ‘কাল মোকে নিয়ে চল ঝুমুরিয়া । পরশু তাক থাকতে লারব।” ‘কাল কুমুরিয়া যাবি ? নিয়ে যাব। সোণাটি আমার কঁাদিস নে, ঝুমুরিয়া তোকে নিয়ে যাব। কাল ৷” তখন নিশ্চিন্ত হয়ে রম্ভ গা এলিয়ে দিল। রামপাল তার চুলের ভ্রাণ নিচ্ছে। এখন কয়েকদিন, হয়তো সাতদিন, হয়তো তারও বেশীদিন, রামপাল তাকে পাগলের মত ভালবাসবে । एटी পরদিন রম্ভাকে সঙ্গে নিয়ে রামপাল ঝুমুরিয়া গেল । নিশুতি রাতে রম্ভাকে কথা দিয়েছিল বলে নয়, নিজে সে হিসেব করে দেখল, কৃষ্ণেন্দুর একদিন আগে ঝুমুরিয়া যাওয়াই ভাল। বীরেশ্বরের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে ঝুমুরিয়ার সব হাঙ্গামা যে চুকে গেছে। এ ভরসা রামপালের ছিল না। হেরম্ব চক্রবর্তী কেবল বীরেশ্বরকে নিপাত করেই ভালমানুষ হয়ে গেছে কিনা বলা কঠিন। বীরেশ্বরের যোয়ান যোয়ান ব্যাটা আছে তিনটি, বাপের অপমরণকে তারা কি ভাবে গ্ৰহণ করেছে, একদম চুপচাপ হয়ে গেছে অথবা প্ৰতিশোধের অন্য কোমর বেঁধে হৈ চৈ কাণ্ড শুরু করেছে, দূর থেকে তাও ঠিকমত অনুমান করা অসম্ভব। বড় ছেলে শ্যামলাল হিসেবী ও শান্ত প্ৰকৃতির মানুষ, তার ওপর চার পাচটি ছেলেমেয়ে থাকায় বিশেষভাবে সংসারীও বটে। সে হয়তো কিছু করবে না। মেজো ছেলে জীবনলাল একটু ভাবুক ধরনের, একবার সন্ন্যাসী হয়ে গিয়েছিল, তারপর বাড়ী ফিরে বিয়ে করে আবার সংসারী হয়েছিল বটে। কিন্তু একটি ছেলে রেখে বৌটা তার সম্প্রতি মরে গেছে। তার এই আত্মহারা অবস্থায় সব কিছুই সম্ভব। ছোট মোহনলালের কোন সাংসারিক বন্ধন নেই, বুদ্ধি বিবেচনা আছে কিনা সন্দেহ, রক্তও যে তার SVG)