পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী অতিথির আদর যত্বের অন্য সব আয়োজন করবার ক্ষমতা কই, সে অক্ষম, তার উপার্জন নেই। হীরেনর কেউ দু’চার দিনের জন্য দেশে এলেও বাড়ীতে পা দিয়েই খরচপত্রের কয়েকটা টাকা শশাঙ্কের হাতে দেয়। শশাঙ্ক তাই দিয়ে তাদের খাতির যত্ন করে। সবটা দিয়ে নয়, কিছু পারিশ্রমিক সে রাখে বৈকি! এবার রুষ্ণেন্দু তাকে বড় বিপন্ন করল। বাড়ী ঢুকে দু'দণ্ড বসল না, খরচপত্র বাবদ টাকা পয়সা দিল না, পারিবারিক কুশল প্রশ্নাদির জবাবগুলি ভাল করে দিতে না। দিতে সঙ্গী দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে আবার বাড়ী থেকে বেরিয়ে গেল। বেলা বাড়তে লাগল, তার দেখা নেই । চা জলখাবারের আয়োজন করতেও তো সময় কম লাগে না গায়ে । দুধ চিনি চা সব কিছুই সংগ্রহ করে আনতে হয়। কেনার লোক কম বলে সহরের চেয়ে গায়ে দুধ অনেক সস্তা, কিন্তু দুধের বড় অভাব গাঁয়ে। গৰু যদি বা থাকে দু’চারটা, রোগ। প্যাটিকা মুম্ষু গৰু, দুধ দেয় এই এতটুকু। বেশী বেলা হলে দুধ ও হয়তো শশাঙ্ক একেবারেই যোগাড় করতে পারবে না। দুপুরের খাওয়ার জন্য মাছতৱকারী কিনতেও দেড় ক্রোশ দূরে লোক পাঠাতে হবে, সে সব কিনে নিয়ে এলে তবে চড়বে রান্না । শাক চচ্চডি দিয়ে তো অতিথিদের ভাত দেওয়া যাবে না ! শশাঙ্ক এখন করে কি ? শেষ পর্যন্ত শশাঙ্ক বাড়ীব মধ্যে স্ত্রীর সঙ্গে পবামর্শ করতে গেল। দিগম্বরী সকলের সকালবেলার জলখাবারের ফেন-ভাত নামাচ্ছিল, মুখ না ফিরিয়ে বলল, “নিজের পয়সা খরচ করেই সব আনে । ঠাকুরপো তাড়াতাড়ি দরকারী কাজে চলে গেছেন, ফিরে এসে তো টাকা দেবেন ? অতি ভাববার কি আছে ।” তাই বটে। এই সহজ কথাটা তো তার খেয়াল হয় নি। শশাঙ্ক নিশ্চিন্ত হয়ে দুধের জন্য লোক পাঠিয়ে নিজেই রাঘব মহান্তির দোকানে চা চিনি প্ৰভৃতি & ऊs८ऊ 6ळ्न । বীরেশ্ববের বাড়ী বেশী দূরে নয়, এইটুকু পথ অতিক্রম করতে সম্ভাষণ ও প্রশ্নের বাধায় বারবার হীরেন ও ক্লষ্ণেন্দুকে থামতে হল। কখন এল, কতদিন থাকবে কোথায় যাচ্ছে, বাড়ীর খবর কি ইত্যাদি সব কিছুই প্ৰত্যেকে জানতে চায়, পথে দাড় করিয়ে ধীর মন্থর অন্তরঙ্গ আলাপের মধ্যে জানতে চায়। এরা ঝুমুরিয়ার ভদ্র অধিবাসী। গরীব চাষী মজুরেরা শুধু প্ৰণাম জানায়, দাড় করিয়ে আলাপ করার স্পৰ্দ্ধা তাদের নেই। নরেশ এক সময় কোথায় সরে পড়ল জানা গেল না । У be o