পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भ्रं বেরিয়ে গিয়েই কয়েক সেকেণ্ডের জন্য ফিরে এসে বলে দিয়ে যায়, “গাজ উনি ছেড়ে দিয়েছেন, ভিক্ষে ও আর বেশীদিন চাইবেন না। আপনাদের কাছে। তার তেজ দেখে হীরেন বলে, “বাপ স!” হীরেন আর কৃষ্ণেন্দু চা খাচ্ছে, শশাঙ্ক একটু লজ্জিভাবে কাছে এল। “আমাকে একবার সহরে যেতে হচ্ছে ভাই। কটা জিনিস না আনলেই নয়।” কৃষ্ণেন্দু বলল, “বেশ তো।” t হীরেন জিজ্ঞেস করল, “কবে ফিরছেন ?? ‘কাল রাতেই ফিরব, নয়তো পরশু সকালে। কদিন পরে যাব বললাম, তা উনি জোর করে আজকেই পাঠিয়ে দিচ্ছেন। চা ফুরিয়ে গেছে। আর সব পরে আনলে চলত, চা পরশুর মধ্যে চাই । ভাল চা আবার ধারে কাছে পাওয়া ষায় না ।” হীরেনের সঙ্গে মস্ত এক প্যাকেট দামী চা ছিল, কিন্তু সে চুপ করে রইল। সহর থেকে তাদের কিছু আনবার দরকার আছে কি না জিজেস করে, হীরেনের কাছে কটা টাকা আদায় করে শশাঙ্ক চলে গেল । ‘সত্যি সত্যি স্বামীকে তাহলে তাড়াতাড়ি সরিয়ে দিচ্ছে!” হীরেন क्लब्न । ‘সরিয়ে দিচ্ছে মানে ? ‘কাল যদি কোন হাঙ্গামা হয়, উনি যদি বিপদে পড়েন। স্বামীর জন্য এতটা মাথাব্যথা কখনো দেখিনি ।” “তুই যার স্বামী তার ? *কখনো দেখিনি ।” হীরেন কথাটা বলে নীরবে কয়েকবার মাথা নাড়ল । “দেখবার চোখ নেই, ইচ্ছা নেই, তাই দেখতে পাওনি। এরকম নাটুকে স্বামীভক্তি ছাড়া আর কিছু তো পছন্দ হয় না।” ‘মমতার নাটুকে স্বামী অভক্তির চেয়ে বোধ হয় এটা ভাল।” ঘনিয়ে আসা সঁাজের ছায়া, গাঢ় হয়ে আসা গুমোট । ধোয় বারান্দা থেকে পাটি ভেদ করে যেন ভাপসা গরম উঠছে, অঙ্গন থেকে বাঝ সিধে উঠে যাচ্ছে উপরে খোলা আকাশের দিকে । জীবন আজ গুরুগম্ভীর-দু’জনের কাছে। হিরেনের কাছেও গুরুভার বটে।