পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ওকে বলে দিয়েছি দিনরাত যত খুশী কাজ করুক, আমি কিছু বলব না। বৌদির মত বৌ পেলে খুশী হতাম, তাই বলে আমি শশাঙ্কদী নই।” কৃষ্ণেন্দু নানা কথা ভাবছিল, আরও কিছু চুপচাপ ভেবে সে বলল, “স্ত্রী কাছে না থাক, তোর বন্ধু আছে। তুইও শশাঙ্কর দা’র সঙ্গে চলে যা হীরেন।” “<dib ?” মনে মনে হীরেনও কথাটা ভাবতে আরম্ভ করেছিল। জেলে যাবার সখটা তার বড়ই কম। কৃষ্ণেন্দু আবার বলল, “তুই থেকে আর কি করবি ? হাঙ্গামা হলে জড়িয়ে পড়বি শুধু। তার চেয়ে চলে যাওয়াই ভাল।” ‘সবাই বলবে। ভয়ে পালিয়ে গেল।” ‘কেউ তা বলবে না। এ ব্যাপারে তোর সংশ্ৰব কি ?” “দেখি ভেবে ।” এটা ছলনা। চলে যাবে ঠিক করেই হীরেন ভাবতে আরম্ভ করেছিল চলে যাবে কি না । নিজেকে অপরাধী মনে করবার কোন কারণ নেই জেনেও মনটা হীরেনের খুত খুত করতে থাকে। শশাঙ্ককে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে তার সতীসাধবী স্ত্রী, স্নেহমমতার গরজে, হয়তো বা ভালবাসারই তাগিদে ।। তার সঙ্গে সেও যদি সরে যায়, সে যাবে নিজের গরজে, নিজেকে বাচাতে । সোজা ভাষায়, বন্ধুকে বিপদের মুখে ফেলে নিজে সে পিটুটান দেবে। অথচ কথাটাও আসলে তা নয়। কৃষ্ণেন্দুর সঙ্গে তার এমন কোন বোঝাপড়া ছিল না, মৌখিক অথবা মানসিক যে রম্ভার বাপের খুন হওয়ার প্রতিবাদে কৃষ্ণেন্দু যাই করুক তাতে তার যোগ দিতে হবে। সে শুধু সঙ্গে এসেছে, তার নিজের খেয়ালে, বেড়াবার জন্য। টাকা দরকার হবে বলে কৃষ্ণেন্দু টাকা চেয়েছিল, সে টাকা দিয়েছে। এ ব্যাপারের সঙ্গে ওইটুকুই তার সম্পর্ক । সঙ্গে এসেছে বলেই যে মারামারিতেও তার যোগ দিতে হবে এমন প্ৰত্যাশা কৃষ্ণেন্দুর মনেও নিশ্চয় জাগে নি। তাছাড়া হেরম্ব সম্পর্কে কৃষ্ণে দুর এই ব্যবস্থায় তার সমর্থনও নেই। সুতরাং চলে যাওয়াতে তার অন্যায় কি আছে ? তাতে ভীরুতার পরিচয় দেওয়া হবে কেন, হীনতার পরিচয় ? এই সময় মোহনকে সঙ্গে নিয়ে রম্ভ আবার এল। হীরেন। ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। সে চলে যাবে, আজ অথবা কাল সকালে । মোহনের সঙ্গে কৃষ্ণেন্দুর R o