পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী জোর করে। দিনভর যারা খাটে, খেতে পায় তারা ? তাড়ি খেয়ে, পচাই খেয়ে তারা বেঁচে থাকে।” রামপালের বেশ নেশা হয়েছে, বকতে ভাল লাগছে। মুখে অদ্ভুত একটা শব্দ করে সে বলতে থাকে,“‘বাবুৱা আবার মিটিং করে উপদেশ ঝাড়ে, মদ খেও না, তাড়ি খেও না, পয়সা নষ্ট কোরো না। বলি ওরে ছুচো পাজী হারামজাদা, তবে খেতে দে-পচাই খাব না তো পেট ভরে খেতে দে, ওষুধ দে-” ‘G*{R{---?» “মদ খেলে রোগ বালাই কম হয় বাবু। তেজী জিনিস তো। পটলদা বলে-” ‘পটলদা কে ? “মোর স্যাঙাৎ । হেরম্ববাবুর বেয়ারা। পটলন্দা বলে, পচাই খা, তাড়ি খা, খবৰ্দার নম্বুরী মাল ছুসিনি রাম-ওতে ওষুধ মেশাল দেয়। নেশা জমে কিন্তু দেহের দফা শেষ ।” বিক্ৰী বন্ধ হবার সময় ঘনিয়ে এসেছে। ফোকরের কাছে ঠেলা ঠেলি, মারামারি। কয়েকজন চলে গেছে, নতুন কয়েকজন এসেছে। চারিদিকের গোলমালে কান পাতা যায় না । সবাই কথা বলছে, হট্টগোলে নিজের কানে পৌছে দিতে চেচিয়ে কথা বলছে-বন্ধু বান্ধব চেনা অচেনার মধ্যে সে এক প্ৰচণ্ড কলরব তুলে আলাপ করা। দু’চারজন শুধু একেবারে চুপচাপ। অতি দুর্বল অক্ষম রুগ্ন তাদের দেহ, মুখে মৃত্যুর অসম্পূর্ণ ছাপ, একটু একটু মদ খাচ্ছে আর চুলছে। কোন নেশাই আর এ জীবনে তাদের কয়েক মুহুর্তের জন্যও উত্তেজিত, জীবন্ত করে দিতে পারবে না। “দশটা পয়সা দাও বাবু। বাবুগো, দশটা পয়সা দাও।” বছর চল্লিশ বয়সের একটি স্ত্রীলোক, ময়লা আটহাতি একখানা কাপড় পরা, মুখ বুক আমসির মত শুকনো। রামপাল ধমক দিল, “ভাগ।” চালার নীচে থেকে মাটি আর সুরকির ছাপ মারা ছেড়া হাফ প্যাণ্ট পরা একটি বিশ বাইশ বছরের ছেলে উঠে দাড়াবার টাল সামলে স্ত্রীলোকটির সামনে এগিয়ে এল । ‘ফের তুই হেথা এইছিস মাসী ? “তুই যে এইছিস বড় ?” RSR