পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দৰ্পণ সদরের দরজা ধন্ধ করে উঠানে নেমে দিগম্বরী কতকটা যেন নিজের মনেই বলল, ‘সব শুনলে উনিও রাগ করবেন না ।” 'ওনার রাগ করবার কি আছে ? ‘ওমা! আপনি যেন ছেলেমানষের মত কথা বলেন ঠাকুরপো। খালি বাড়ীতে একলাটি পরী-পুরুষের সঙ্গে বেী রাত কাটালে স্বামী কিছু ভাববে না, একটু। চটবে না ? তবে আপনার কথা ভিন্ন। আপনি তো পর নন।” কৃষ্ণেন্দু আর হীরেন দু’জনের বিছানাই ওলট পালট হয়ে আছে। দুটি সু্যটকেশ খোলা, জামাকাপড় এলোমেলো ভাবে ছড়ানো । দিগম্বরী হীরেনের বিছানা ঠিক করে দিল । “আপনার খাবারটা এনে দি ? রান্না কিছু হয় নি, যা হাঙ্গামা গেল। শুধু ভাজা আর মাছের ঝোল। দুধটুধ দিয়ে কোনরকমে খেয়ে নিন।” “আমি খাব না বৌঠান। খেয়ে এসেছি।” ‘ওমা, কোথায় খেলেন ?? 'খেয়েছি। এক জায়গায় ।” মদের বোতলটার দিকে দিগম্বরী বার বার তাকাচ্ছিল । তারপর চেয়ে দেখছিল হীরেনের মুখ। খানিক্ষণ চুপ করে দাড়িয়ে থেকে সে মৃদুম্বরে বলল, “আপনি মদ খান ঠাকুরপো ?” হীরেন জবাব দিল না । একি বোকার মত প্রশ্ন ? ‘মদের বোতল নয় ওটা ?” O হীরেন বিরক্ত হয়ে বলল, ‘হঁ্যা, ওটা মদের বোতল । মদ খেয়েছি, আর ও খাব। আপনার কিছু ক্ষতি আছে ? 'খেয়েছেন !” দিগম্বরী যেন চমকে গেল । “আমিও তাই ভাবছিলাম। না ঠাকুরপো, আমার কোন ক্ষতি নেই। এমনি জিজ্ঞেস করলাম। তবে আমি যাই।” দরজার কাছে পিছিয়ে গিয়ে অনুমতির অপেক্ষায় দিগম্বরী দাড়িয়ে রইল। “যাই, ঠাকুরপো ?” ‘দাঁড়ান একটু। এক মিনিট।” সন্দিগ্ধ, বিস্মিত দৃষ্টিতে হীবেন তার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। খালি বাড়ীতে তাকে মাতাল জেনে ভয় পেয়েও দিগম্বরী পালিয়ে গিয়ে নিজের ঘরে খিল RRS