পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

r†ရ ‘বেশ, আমি তা’হলে দু’টাকা দিচ্ছি।” শন্তু মাথা নেড়ে বলল, “এক টাকা। কাজ করে পয়সা নেব, ভিক্ষে তো নিচ্ছিনা আপনার কাছে।’

  • আচ্ছা, আচ্ছা, এক টাকা নিও। অত মেজাজ করে না ভাই। ভাল মানুষ কখনো মিছিমিছি মেজাজ গরম করে না ।”

শভু একটু অবজ্ঞার হাসি হাসল। —'মেজাজ করিনি। আপনার কাছে সবাই মিন মিন করে কথা কয়, কেউ সোজা স্পষ্ট কথা বললে আপনার মনে হয় Casis Cf2Ott ‘বিনয় মান না ? ভদ্রতা ? ‘বিনয় মানে তো নেকামি ? একেবারে নেতিয়ে পড়া ? ওসব বিনয় আর ভদ্রতার ধার ধারি না মশায় । বেশী বিনয় করতে গিয়েই তো আমরা গেলাম, কেবল সেলাম ঠুকতে ইচ্ছে হয়।” হীরেন দাড়িয়ে কিছুক্ষণ শঙ্কুর সাথে আলাপ করল। শঙ্কুর বাবা সম্প্রতি মারা গেছেন। মা মাসী ভাই বোন ভাগনে ভাগ্নিরা আছে। আর আছে কিছু জমি। শন্তু জমি চাষ করায় আর তার সাইকেল চেপে গ্রামে গ্রামে ঘুরে অডার সংগ্রহ করে, তারপর একদিন সদরে গিয়ে সব কিনে আনে । হীরেন মনে মনে ভেবে রাখল, কিছুদিন পরে একবার এই ছেলেটির খবর নিতে হবে। তারপর খানিকটা ভদ্রতার খাতিরে আর খানিকটা কর্তব্যবোধে হীরেন দেখা দিতে গেল ।রম্ভাকে। একটু সহানুভূতি জানাবে। টাকা পয়সার দরকার আছে কিনা জিজ্ঞাসা করবে। নিজের ভাবেই সে মাসগুল। জীবনটা ভাল লাগছে। এক রাত্রে ফুৎকারে উড়ে গিয়েছে সব ক্ষোভ । মন পাক খাচ্ছে বিরহিনী মমতাকে কেন্দ্ৰ করে | মমতা অবাক হয়ে চমকে যাবে, খুশীতে নেতিয়ে পড়বে তার বুকে, হাসি মুখে আর ছল ছল চোখে । আনমনে সে পথ চলে। গায়ের চাপা উত্তেজনা আর চাঞ্চল্য কিভাবে প্রকাশ পাচ্ছে, একক মানুষের মুখে, ঘরের দাওয়ায়, ফকিরের মুদি দোকানের সামনে, রামঘোষের বাড়ীর দক্ষিণে বটগাছ। তলায় দু’চার দশজনের জমায়েৎ হয়ে আলাপ করার ভঙ্গিতে, কৃষ্ণেন্দুর বন্ধু সে তার দিকে চাউনির রকমে -এসব কিছুই তার চোখে পড়ে না। RR