পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

fifiဍ একি অন্যায়! একি অবৈধ, বেআইনী আচরণ পুলিশের, হেরম্বের। দেশভক্ত ত্যাগী একজন নেতা এলেন তাদের গায়ে তাদের ভালর জন্য, বিনা কারণে চুপি চুপি তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া তাদের মধ্য থেকে। " কোন হাঙ্গামা হয় নি, কোন বেআইনী ব্যাপার ঘটে নি, একটা সভা পৰ্যন্ত করা হয় নি। কেন তবে গ্রেপ্তার হবে কৃষ্ণেন্দু আর মোহনলাল, আটক থাকবে বিনা বিচারে ? কেন চলবে হেরম্বের এ কারসাজি ? সরকার কি হেরম্বের হাতের পুতুল ? কৃষ্ণেন্দু আগে একবার এসে লড়াই করে গিয়েছিল চাষীদের জন্য। মোহনলাল চাষীদের মধ্যে কাজ করছিল । দু’জনে ধরা পড়ায় চাষীদের মধ্যে রীতিমত উত্তেজনা দেখা দিল। জালালুদ্দীন মারা গিয়েছিল নিমুনিয়ায়। কিন্তু জেলে মারা যাওয়ায় সকলের মনে সে শহীদের স্থান পেয়েছে। এ মনোভাব সকলের মনে আরও স্পষ্ট হয়েছে বীরেশ্বরের কারামুক্তির দিন সূর্যের নেতৃত্বে জালালুদ্দীনের স্মৃতিকে সম্মান জানিয়ে যে শোভাযাত্রা ও সভা হয়েছিল তার ফলে। সূৰ্যও আজ বেঁচে নেই। শোভাযাত্রার সামনে ছিল জালালুদ্দীনের ভাই মহীউদ্দীন । মোহনলালের দল তাকে নেতা করে কোমর বেঁধে লেগে গেছে সকলের অসন্তোষকে আরও গভীর, আরও তীব্র করে তুলবার কাজে। বীরেশ্বরের অপমৃত্যুতেও চারিদিকে এমন সাড়া জাগে নি। চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছিল যথেষ্ট, কিন্তু এমন উত্তেজনা দেখা দেয় নি। ও যেন খানিকটা ছিল হেরম্ব ও বীরেশ্বরের ব্যক্তিগত কলহের ব্যাপার। হেরম্ব অত্যাচার করছিল। সত্য, বীরেশ্বর এক নিজের জন্য লড়তে যায় নি তাও সত্য, কিন্তু তবু হাঙ্গামাটা হয়েছিল বীরেশ্বরের জন্যই। হেরন্থের মত অত্যাচারীকে প্রকৃতির একটা অনিবাৰ্য উৎপাতের মত মেনে নেবার সংস্কার আজও লোকের কেটে যায় নি। জমিদার, ধনী আর প্রতিপত্তিশালীদের সঙ্গে আজও তো লড়াই একরকম হয়নি দেশের লোকের, ওদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়বার * প্রেরণাও যোগান নি নেতারা । সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহ্য সৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু হেরম্বদের সঙ্গে সংগ্রামের ঐতিহ্য তো নেই-ই, বরং আছে মুখ বুজে। সব সয়ে যাবার অভ্যাস। তারপর ছিল এই যুক্তি যে দাঙ্গা বাধবার উপক্রম সেদিন সত্যই হয়েছিল এবং বীরেশ্বরের মৃত্যু ছিল রহস্যজনক, ঠিক কে তাকে মেরেছিল নিঃসন্দেহে জানা যায় নি। বীরেশ্বরের মৃত্যু নিয়ে তাই হৈ চৈ হয়েছিল। কিন্তু ব্যাপক ক্ষোভ ও অসন্তোষ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠেনি। নেপথ্যে ছিল । R\SONSO