পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী রামপাল কাছে এলে তারা যাতে শুনতে পায় এত জোরে । রামপাল থমকে দাড়াতে রম্ভ তার হাত চেপে ধরে জোর করে টেনে এগিয়ে যায়। এখানে একজন সুর করে গান ধরে ‘রম্ভ দিদিলে-” গান তার শুরুতেই আচমকা থেমে যায়। নরেশের হাতের মস্ত এক মাটির চাপড়া তার মুখে এসে লেগে গুড়ো হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। নরেশ যে কখন তাদের পিছু নিয়েছিল ।রম্ভ বা রামপাল টেরও 에 f II নরেশের দিকে তেড়ে যেতে গিয়ে অনাথের দল সামনে পড়ে রামপালের । দু’জনের ঘাড় শক্ত করে ধরে রামপাল অন্যদের দিকে সজোরে ঠেলে দেয়, সেই ধাক্কায় পাঁচজন আছাড় খেয়ে পড়ে রাস্তায় ৷ উঠে গায়ের ধূলো ঝাড়তে ঝাড়তে নাগালের বাইরে গিয়ে তারা গাল দিতে আর শাসাতে শুরু করে । কিছুক্ষণের মধ্যে চারিদিকে রটে যায় যে ঘোষপাড়ায় দাঙ্গা হয়ে গেছে। হেরম্বের লোকেরা রম্ভাকে ধরে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছিল, পাড়ার লোক মিলে তাদের মেরে তাড়িয়ে দিয়েছে। এত তাড়াতাড়ি গুজবটা ছড়ায় যে রম্ভার বাড়ী পৌছানোর আগেই হাঙ্গামার খবরটা সেখানে পৌছে যায়। জীবনলাল রাগে ফোস ফোস করছিল, রম্ভ বাড়ীতে পা দেওয়া মাত্র সে চীৎকার করে ওঠে, “বাড়ী ঢুকছিস লজ্জা করে না ? বেরো তুই, বেরো বাড়ী থেকে।” শ্যামলাল ভয় পেয়ে তাড়াতাড়ি বলে, “আঃ, মাথা গরম করছি কেন ? জীবনলালের তখন চৈতন্য হয় যে রম্ভার মত বোনকে চটানো সঙ্গত নয়, পিছনে তার অনেক শক্তিশালী লোক আছে। রম্ভার সঙ্গে সে গোলমাল করেছে ফিরে এসে একথা শুনলে মোহনলালও কি করে বসবে ঠিক নেই। রম্ভাও যদি গায়ের কাটা গুণ্ড ছোড়াকে লেলিয়ে দেয় তার পিছনে ! একেবারে সুর বদলে সে তাই বড় ভায়ের সম্মেহ অনুযোগ জানায়, “দ্যাখ দিকি তুই কি আরম্ভ করেছিস । গায়ে মুখ দেখাবার উপায় রাখলি না।” জীবনলালের বেী মন্তব্য করে একটু তফাৎ থেকে, “কি সব অনাছিষ্ট কাণ্ড রাবু গোরস্ত ঘরে ! বাপের জন্মে এমনটি দেখি নি। আর ‘’ '%','-রভা নাক সিটিকে জবাব দেয়, ‘বাপের জন্মে দেখবে কিসে, কেমন বাপে জন্ম দিয়েছে সেটা তো দেখতে হবে।’ R98