পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী ব্যাপার নয়। পদে পদে তার গ্ৰাম্যতা ও অসভ্যতা ধরা পড়িতে থাকিবে, বাড়ীর চাকর দাসীরাও বুঝিতে বাকী থাকিবে না। আধুনিক সভ্য পরিবারে বাস করিতে সে একেবারেই অভ্যন্ত নয়। ‘কাল চলে যাচ্ছি, এক বেলার জন্য হাঙ্গামা করে কি হবে ?” চিন্ময়ের বাড়ীতে বাস করার বিপদকে বরণ করার চেয়ে দেশে পালানও ভাল । অবশ্য, কালই যে যাইতে হইবে এমন কোন কথা নাই। যাওয়া ठेिक করিয়াও মানুষ অনেক ছুতায় যাত্ৰা পিছাইয়া দিতে পারে! t \ চিন্ময় সায় দিয়া বলিল, “না, কাল যদি চলে যাও, তবে আর হাঙ্গামা করে। লাভ নেই। কিন্তু তুমি কলকাতা এসেছি কেন তাতো বললে না ?” মোহন বলে, চিন্ময় শুনিয়া যায়। শুনিতে শুনিতে এমন মুখের ভাব হয় চিন্ময়ের, বন্ধু যেন আত্মহত্যার পরিকল্পনা শুনাইতেছে! ‘সাধ করে দেশের বাড়ী ঘর ছেড়ে এসে তুমি কলকাতায় বাড়ী ভাড়া কবে থাকতে চাও ?” “এখনকার মত বাড়ী ভাড়া নেব। তারপর দেখেশুনে কিছু জমি কিনে একটা नाऊँी कद्भदांझ थेष्छ। अigछ ।' সবিস্ময়ে বন্ধুর মুখের দিকে চাহিয়া চিন্ময় বলে, “তুমি পাগল হয়ে গেছ মোহন । তোমার মাথার ঠিক নেই।” চিন্ময়ও সন্ধ্যাকে ডাকিয়া পাঠায় নাই, সন্ধ্যাও খবর পাইয়া আপনা হইতে উকি দিয়া যায় নাই। " সন্ধ্যার কথাটা মোহনকেই উল্লেখ করিতে হইল, তার সহরবাসের পরিকল্পনা সম্পর্কে চিন্ময়ের সঙ্গে আলোচনা ও তর্কের পর বিদায় নেওয়ার সময় । সেই পুরাতন তর্ক, কলেজ জীবনে প্ৰতিদিন যে তর্কে তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়া যাইত। আজও ব্যক্তিগত আলোচনাটা মিনিট তিনেকের মধ্যে পরিণত হইয়াছিল বহুরূপী সভ্যতার বহুমুখী পরিণতি ও সম্ভাবনার বিচারে এবং এক মুহুর্তে এতকাল দূরে দূরে থাকার জন্য দুজনের মধ্যে অপরিচয়ের ব্যবধানটা গিয়াছিল বাতিল হইয়া । একটু যে সঙ্কোচ ছিল তাও কাটিয়া যাওয়ায় মোহনের পক্ষে যাচিয়া সন্ধ্যার সঙ্গে দেখা করার দাবী জানানো সহজ হইয়া গিয়াছিল। সন্ধ্যার কথা উঠিতেই চিন্ময় হঠাৎ গম্ভীর হইয়া বলিল, “বলিনি তোমায় ? সন্ধ্যা তো এখানে নেই।” RV7