পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী “বেশ বড় একজনকে দেখিও, সস্তায় সেরো না । একশো টাকা ভিজিট লাগে, দিও। এখন তো তোমার হাত ।” মোহন ক্ষুন্না হইয়া বলে, ‘আবার ? আবার এভাবে কথা বলছ ? এমন করে। কথা বলে তুমি, তোমার যেন কোন দাবী নেই, অধিকার নেই। তুমি না লেখাপড়া শিখেছে ?” “পরীক্ষা দিলে অনাস পেতাম—ফাষ্ট ক্লাস । দিতে দিলে কই ?” नांक्षा মুচকিয়া ठूgन । \ এই একটিমাত্র ভরসা তার সম্বন্ধে মোহন করে, তার কিছু পড়াশোনা করা আছে। তার গরীব বাপ মেয়েকে স্কুল কলেজে পড়াইতে, তালি দেওয়া জুতাজাম পরিয়া দিন কাটাইয়াছে। এটা অবশ্য তার কন্যার প্রতি বিশেষ অনুরাগ অথবা উদারতার প্রমাণ নয়-আরও অনেকেই যে হিসাবে মেয়েকে লেখাপড়া শেখায়, তারও ছিল সেই একই হিসাব। লেখাপড়া জানা মেয়ের ভাল পাত্র জোটে, বিবাহে খরচ কম লাগে, বিবাহের সময় যে মোটা টাকা লাগিবেই, সেটা মেয়েকে লেখাপড়া শিখাইতে অল্পে অল্পে খরচ করিয়া গেলে দোষ কি ? মোহনকে জামাই করার সময় বোধ হয়। ভদ্রলোকের ভুল ভাঙ্গিয়াছে। মোটা টাকা ঋণ করিতে হইয়াছে, লাবণ্যের মারি গায়ের একখানা গয়না ও তবে একথাও সত্য যে মেয়েকে লেখাপড়া না শিখালেই মোহনকে জামাই করার ভাগ্য তার হইত না । মোহনের বাপের জন্য লাবণোর কলেজে পড়া বন্ধ হইয়াছিল, পিছনে সায় ছিল মার। এ বিষয়ে ছেলের সঙ্গে সে আপোষ করে নাই । কলেজে পড়া মেয়ে আনিয়াছে তাই ফুথেষ্ট-এবার তাকে অন্তঃপুরে বৌ হইয়াই থাকিতে হইবে। মোহন তাকে পড়াশোনা একেবারে বন্ধ করিতে দেয় নাই-কর্মহীন অলস দিন কাটাইতে লাবণ্য ও বই পড়া একটা অবলম্বন করিয়াছে। মোহন বই কেনে, লাবণ্য পড়ে । ইংরাজী সাহিত্য সে বোধ হয় বেশীই জানে মোহনের চেয়ে। কখন যে পড়ে, মোহন ভাল বুঝিতে পারে না । নূতন বই নিজের শেষ হওয়ার আগে সে উৎসাহের সঙ্গে তাগিদ দিয়া বলে, “তাড়াতাড়ি পড়ে নিও, আলোচনা করব—', R tr