পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরবাসের ইতিকথা গলাটি মিষ্টি । মানুষটা রোগ, গলাটি সরু। কিন্তু গলার আওয়াজ তীক্ষ নয়, ঝঙ্কারে সার্থক ও মধুর। তার গান শুনিয়া মোহন মুগ্ধ হইয়া যায়। গানের সুরে তার স্বামীকে এভাবে মুগ্ধ করার জন্য লাবণ্য তাকে একটু হিংসা করে । অন্যপক্ষে, লাবণ্যের রূপ দেখিয়া মাঝে মাঝে জগদানন্দের চোখে দু’একটা পলক পড়ে না। রূপের জন্য লাবণ্যকে উৰ্মিলা একটু হিংসা করে। চিন্ময় বড় ব্যস্ত। দু’চারজন বন্ধুর সঙ্গে মোহনের পরিচয় করাইয়া দিয়াই হঠাৎ সে দুর্লভ হইয়া উঠিয়াছে, সামাজিক জীবনে সময় দিতে পারে না । অফিসে কি যেন হাঙ্গামা বাধিয়াছে, পিতাপুত্রের এক মুহুৰ্ত্ত অবসর নাই। যতটুকু সময় বাড়ীতে থাকে দু’জনে এক সঙ্গে বসিয়া কাগজপত্ৰ ঘাটে আর পরামর্শ করে । কি হইয়াছে কেউ জানে না, তবে দু'জনের ভাবসাব দেখিয়া বাড়ীর কেরাও একটু হকচকাইয়া গিয়াছে। ঝরণা বলে, “মেজাজ যা হয়েছে দু’জনের, কি বলব আপনাকে । আমরা কেউ কাছে ঘোষি না ।-নগেন আসে না যে ? বেশ লাগে আপনার ভাইকে । এমন ছেলেমানুষ !” নগেন ছেলেমানুষ বৈকি । ছেলেমানুষকে ছেলেমানুষ বলার মানে মোহন বুঝিতে পারে না। “সে রকম ছেলেমানুষ বলছি না, কলেজে পড়ে। তবু খুব সরল। মিনু সিগারেট খায়, আমি সেদিন নগেনকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি খাও না ? বললে কি জানেন ? না, খাই না, দাদা বারণ করেছে! আপনাকে খুব ভয় করে । শাসন করেন বুঝি খুব ?” ‘শাসন ? শাসন করার দরকার হয় না। আমায় খুব ভালবাসে। আমি যা পছন্দ করব না ভাবে, কখনো তা করে না ।” ঝরণা। গম্ভীর মুখে বলে, “তারই নাম শাসন করা। আর কি শাসন করবেন, বেত লাগাবেন ? বড় ভাই সেজে থেকে ওর মনটা আপনি দমিয়ে রাখেন । ভাবলে এমন আশ্চৰ্য্য হয়ে যাই, আপনারা সব বোঝেন না যে, চেপে রাখলে এই বয়সে কারো মনের স্বাধীন বিকাশ হতে পারে না ? ? ঝরণার কথার বাঝ মোহনের মনে গিয়া লাগে। কিছু সে বলিতে পারে না। ঝরণা শুধু তাকে দোষ দেয় নাই। সব বড় ভাইব্দের-শুরুজনদের বিরুদ্ধে \e Ca

  • ο (α)