পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরবাসের ইতিকথা চিন্ময়ের স্ত্রীর সঙ্গে নয়, সন্ধ্যার সঙ্গে সে যখন খুশী গিয়া দেখা করিয়া আসিতে পারে। কিন্তু ফিরিয়া আসিয়া চিন্ময়কে বলিতে হইবে। একথা বন্ধুর কাছে গোপন করা চলে না । একেবারে উল্লেখ না করার মত তুচ্ছ নয় কথাটা । সন্ধ্যা তাকে ত্যাগ করিয়া গিয়াছে কয়েক বছরের মতো। দুজনের মধ্যে চিঠি লেখা পৰ্য্যন্ত বন্ধ। এ অবস্থায় সন্ধ্যার সঙ্গে দেখা করিতে গেলে চিন্ময়ের কাছে \ठ| 69न्म कइ यश व् । এই জন্য কি এতদিন সে যাই যাই করিয়াও সন্ধ্যার কাছে যায় নাই ? চিন্ময়কে পরে বলিতে হইবে, এই ভয়ে ? হয়তো ঠিক ভয়ে নয়, কথাটা আজ তার খেয়াল হইয়াছে প্ৰথম। তবে মনান্তরের ফলে দু’জনে তারা ভিন্ন হইয়া গিয়াছে বলিয়াই সে যে একজনের সহিত মাখামাখি করিতে করিতে আরেকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিতে ইতস্তত করিয়াছে তাতে সন্দেহ নাই । কলিকাতা আসিয়া প্ৰথমে সন্ধ্যার সঙ্গে দেখা হইলে চিন্ময়ের কাছে। যাইতে সে হয়তো ঠিক এমনি অস্বস্তি বোধ করিত। কি ভাবিবে চিন্ময়, কি বলিবে ? যদি সে ভাবিয়া বসে যে মোহন তাদের মিলন ঘটানোর উদ্দেশ্যে মধ্যস্থতা করিতে গিয়াছিল ? একথা ভাবিয়া যদি সে রাগ করে ? যদি হঠাৎ চিন্ময়ের দুরন্ত আশা জাগে যে মোহনের কথা শুনিয়া সন্ধ্যা নিজের ভুল বুঝিতে পারিয়াছে, এবার সে ফিরিয়া আসিবে ? ট্ৰেণ চলিতে থাকে। আর মোহন এমনি সব জল্পনা কল্পনা করিতে থাকে ! সন্ধ্যার সঙ্গে তার কি কথা হইয়াছে শুনিবার জন্য চিন্ময় হয়তো আগ্রহে ফাটিয়া পড়িবে কিন্তু আপনা হইতে মুখ ফুটিয়া কিছু জিজ্ঞাসা করিতে পরিবে না। যাচিয়া তাদের সাক্ষাতের বিস্তারিত বিবরণ শুনাইতে সেও লজ্জা বোধ করিবে । চিন্ময় হয়তো জিজ্ঞাসা করিবে, কেমন আছে ? সে জবাব দিবে যে ভালই আছে—এবং তার পর হয়তো চিন্ময় জোর করিয়া অন্য প্ৰসঙ্গ টানিয়া আনিবে। বাগানের গাছে গাছে তখন শেষরাত্রির বৃষ্টির জল রোদের তেজে শুকাইয়া যাইতেছে, ঘুমের বিছানা ছাড়িয়া সন্ধ্যা চোখ বুজিয়া শুইয়া ছিল বাথরুমে চীনা মাটির পুকুরে মানের বিছানায়। রুক্মিণীর কাছে খবর শুনিয়া বলে, “মোহন এসেছে, মোহন ! চুলে সাবান দেব ভাবছিলাম, মোহন এসেছে ! জানতাম আসবে।” V9) )