পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্রন্থাবলী পরস্পরের মধ্যে তারা বুঝাপড়া করিয়া দূরে সরিয়া গিয়াছে, আবার বুঝাপড়া হইলে একদিন কাছে আসিবে। মোহনের ভয় ও ভাবনার অন্ত ছিল না । দেশে অত সমারোহের সঙ্গে বাপের বাৰ্ষিক কাজ সম্পন্ন করিবার সময়েও তার এতখানি উদ্বেগ জাগে নাই, আজ সহরের শ'খানেক নরনারীকে বাড়ীতে আহবান করিয়াই সে একেবারে কাবু হইয়া পড়িয়াছিল। দেশে কি ত্রুটিবিচ্যুতির ভয় ছিল না, নিন্দার ভয় ছিল না ? দেশের আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব পরিচিত মানুষেরা কি ভাবিবে, কি বালিবে এ চিন্তা কি এতই তুচ্ছ ছিল তার কাছে ? তাই স্বাভাবিক। তারা ছিল নীচের স্তরের মানুষ, আজ মোহনের বাড়ীতে যারা আসিয়াছে তারা ਚੈ স্তরের। এই স্তরে উঠিবার ಡ್ಜತಿ। 6भइट्ञ করিতেছে, ওদের প্রথম বাড়ীতে ডাকিয়া ভয়ে ভাবনায় কাবু হইয়া পড়িবে বৈ কি । উৎসবের শেষে শুধু জগদানন্দ এবং সন্ধ্যা ছাড়া সকলে হাসিমুখে বিদায় নিয়া চলিয়া গিয়াছে, একটা সিগারেট ধরাইয়া মোহন অসীম গর্ব ও তৃপ্তি উপভোগ করিতেছে, জগদানন্দ বলিল, “ত্যাগ, উদারতা, অনুভূতি, আদর্শ এসব কিছু নেই, সব কটা স্বার্থপর, ফাকিবাজ কুটিল। সুখ আর স্বাচ্ছন্দ্য ছাড়া কিছু বোঝে না, কোন বিষয়ে মাথা ঘামায় না। শুধু বাইরের চাকচিক্য ।” এসব শোনা কথা । ব্যর্থ নিম্পেষিত আশাহীন দুঃখী মানুষেরা এই সব অভিযোগ করে। কিন্তু কথাগুলি স্বয়ং জগদানন্দের মুখে শুনিতে হওয়ায় মোহনের চমক লাগিয়া গেল । সন্ধ্যা বলিল, “সহরে মানুক্স এই রকম হয় ।” ‘সত্বরে মানুষ ? সন্থরে মানুষ বলে কোন বিশেষ শ্রেণীর মানুষ আছে নাকি..? ওদের প্রকৃতিই এই রকম। যেখানে থাক। ওদের জীবন কাটাবার মূলনীতিটাই এই রকমই থাকবে, ধরনটা একটু ভিন্ন হতে পারে। সহরের বাইরে ওরা দেশের চারিদিকে ছড়িয়ে থাকে, অতটা চোখে পড়ে না। - সহয়ে ওরা দল বঁধে, নিজেদের সমাজ তৈরী করে আর নিজেদের মধ্যে পাল্লা দিয়ে দেখাবার চেষ্টা করে বাইরের পালিশটা কার কত চকচকে। লোকে ভাবে দেখিটুধুবুৰি সহরের । সহরে বাস করে বলেই ওরা এ রকম হয়েছে। ক্লিন্ত, NORR