পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

瓦和 সকালে সকলে দেরী করিয়া ওঠে । সবচেয়ে বেলা হয়। লাবণ্য, সন্ধ্যা আর নগেনের। আধা ঘণ্টার মধ্যেই লাবণ্য আবার ফিরিয়া যায় বিছানায়। তার বিবৰ্ণ মুখ দেখিয়াই বুঝা যায় আজ এবং হয়তে কালও সে বিছানা ছাড়িবে না । মোহনকে ডাকিয়া সে করুণ সুরে বলে, “বড় ডাক্তার ডাকবে বলেছিলে |ष ডাকো না ?” ‘তিনজনকে তো দেখালে । আর কতবড় ডাক্তার দেখাবে ?” "আরও বড় ডাক্তার। -সবচেয়ে বড় । মরে গেলে তো আর দেখাতে হবে না ।” “আচ্ছা ওবেলা ডাকব ।” “ওবেলা নয়, এখুনি।” “সন্ধ্যাকে পৌছে দিয়ে আসি ? ডাক্তার এসেই তো তোমার কষ্ট কমিয়ে দিতে পারবে না ।” “পারবে। সন্ধ্যাকে ড্রাইভার পৌছে দিয়ে আসুক। তুমি আমার কাছে থাকে।” ‘বারটা একটার মধ্যে ফিরে আসব। লাৰু।” “না না, তুমি যে ওনা। তুমি কাছে না থাকলে সইতে না পেরে আমি হয়তো গলায় ফাস লাগিয়ে মরে যাব ।” লাবণ্য অনেক খাপছাড়া কথা বলে, আজকের কথাটা অদ্ভুত রকমের মৌলিক। তবে তার কথার মানে খুব পরিষ্কার। অন্ততঃ তাই মনে হয় মোহনের। “সন্ধ্যাকে আমি নিজে পৌছে দিতে না গেলেই তোমার অসুখ কমে যাবে বলছ তো লাৰু ? লাবণ্য অবাক হইয়া মোহনের দিকে তাকায়। তার সেই খাটি বিস্ময়ের মধ্যে নিজের সূক্ষ্ম বিশ্লেষণের ফাকিটা মোহন যেন স্পষ্ট দেখিতে পায়। সন্ধ্যার কথা লাবণ্যের মনেও আসে নাই। যন্ত্রণা তার সত্যই অসহ্য হইয়া উঠিয়াছে, জগতে তার একমাত্র আপনার জনটিকে তাই সে কাছে রাখিতে চায়। সন্ধ্যাকে পৌছাইয়া দিয়া আসিবার বদলে তাকে কাছে থাকিতে বলার আর কোন কারণ নাই । নিজের একটা অনির্দিষ্ট ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে রাগে মোহনের মন জ্বালা করিতে থাকে । VV) D