পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরবাসের ইতিকথা চিন্ময়ের ভালবাসা শুধু কড়া বা দুৰ্দান্ত নয়—কোমলও বটে, এদিকে আবার বড় বেশী গভীর, বড় বেশী সজাগ । সন্ধ্যার জন্য নিজের প্ৰেম সম্পর্কে সে যেন চব্বিশ ঘণ্টা সচেতন হইয়া থাকে, সন্ধ্যাকে এক মূহুর্তের জন্য ভুলিবার সুযোগ দেয় না যে সে তাকে প্ৰাণ দিয়া ভালবাসে । সন্ধ্যাও তাই বলে। বলে, “একেই তো মানুষটা সব বিষয়ে সিরিয়াস— ভালবাসা পৰ্য্যন্ত অত সিরিয়াস হলে মানুষের সয় ? তবে-” “তবে ? “তুমি থাকলে এরকম হত না । আমি ঠাণ্ডাই থাকতাম। আমার কেউ ছিল = 0श३० ।' “তুমি বেশ ঠাণ্ডা লক্ষ্মী মেয়েই আছ সন্ধ্যা।” বেলা দেড়টার সময় বাড়ী ফিরিয়া জগদানন্দকে লাবণ্যের ঘরে বসিয়া থাকিতে দেখিয়া মোহন আশ্চৰ্য্য হইয়া গেল । কলিকাতার সব চেয়ে ভাল, সব চেয়ে বড়, সব চেয়ে নামকরা ডাক্তারকে আনার জন্য নগেনকে লাবণ্য জগদানন্দের কাছে পাঠাইয়া দিয়াছিল। জগদানন্দ নিজেই ডাক্তারকে সঙ্গে আনিয়াছে। চিকিৎসার ব্যবস্থা করিয়া এইমাত্র ডাক্তার বিদায় হইয়া গেলেন । ইতিমধ্যেই লাবণ্য একটু ভাল বোধ করিতেছে। ‘তুমি তো চলে গেলে আমায় ফেলে, আমার এমন ভয় করতে লাগল, যদি মরে যাই ? উনি বলছেন সেরে যাব।” ‘কে, ডাক্তারবাবু?” “, of ' মোহন অস্বস্তি বোধ করিতে থাকে, বিরক্তও হয়। লাবণ্যের। কাণ্ডজ্ঞান নাই, লজ্জাসরাম নাই। একি তার জর হইয়াছে যে বাহিরের লোককে ঘরে বসাইয়া অসুখের কথা আলোচনা করিতেছে ? মেয়েলি অসুখের অশ্লীল বিজ্ঞাপন রচনার পরামর্শ-সভা যেন বসিয়াছে তার অন্দরে তার স্ত্রীকে কেন্দ্ৰ করিয়া । দু’কান মোহনের ঝাঁ ঝা করিতে থাকে। গুরুদেবের ভাই বলিয়া জগদানন্দ যে তার মায়েরও প্ৰণম্য, লাবণ্যের সঙ্গে তার যে পিতার মত সম্পর্ক, এটা মোহনের খেয়াল থাকে না । V\96