পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী মাথা ঠোঁট করিতে চায়, নিজের হাত পা কামড়াইতে চায়। সকলের সামনে সেটা তো করা যায় না। নীরবে ঝরণার মুখের দিকে কাতর চোখে চাহিয়া থাকে। নিজের মনে একটা লড়াই করিতে করিতে জয় পরাজয় তুচ্ছ করিয়া মোহন বলে, “তোমার তো বেশী লাগেনি। নগেন। ঝরণাকে পৌছে দিয়ে এসো না ? একটা রিকস ডেকে দিচ্ছি।” রাত্রে মোহনের বক্ষলগ্ন হইয়া লাবণ্য যেন নালিশের সুরে বলে, “ধন্য তুমি। কী ভাবে সকলকে খেলালে ?” 'cश्व्लांक्षांश ? বক্ষলগ্ন হয়ে থাকার সময় লাবণ্যের অসীম সাহস দেখা যায়, মোহনের পক্ষে চবম অপমানজনক কথাও সে অনায়াসে যেন খেলার ছলেই বলিয়া যাইতে পারে। “কি ভাবে মাকে জব্দ করলে ! কিভাবে ঝরণা হারামজাদিকে বুঝিযে দিলে তোমার ছেলেমানুষ ভাইটির সঙ্গে ইয়াকি চলবে না। আবার কি ভাবে ভাইটিকে দিযেই এক রিক্সায় ঝরণাকে—” মোহন উঠিয়া গিয়া আলো জালে, সোফায় বসিয়া মোটা একটা বই তুলিয়া নিয়া পাতা উল্টাইতে উল্টাইতে বলে, “তুমি ঘুমোও । আমি কযেকটা হিসাব নিকাশের কাজ সেরে শোব।” লাবণ্যের কান্নার শব্দ শুনিয। বিলাতে ছাপানো ইংৰাজী বইটা ছুড়িয়া ফেলিয়া দিয়া খাটের কাছে গিয়া বলে, ‘কেঁদো না। র্কাদলে মারব।--তোমার এই ছিচকেমি কান্না বন্ধ করে অন্য কান্না কঁদাব ।” পাশ ফিরিয়া শুইয়া কান্না থামাইয়। মড়ার মত কাঠ হইয়া পডিয়া থাকে। লাবণ্য । ভাবে, কি তার লাভ হল সহরে বাস করতে এসে ? MNS শীতের কুয়াশায় সহরে ধোয়া মিশিয়া আলোগুলিকে মান করিয়া দেয়। অপরাহ্নে বাতাস যেন একেবারে মরিয়া যায়, ভাসিয়া যাওয়ার বদলে ধোয়া অতি ধীরে ধীরে চারিদিকে ছড়াইয়া পড়ে, কখনো কুণ্ডলী পাকাইয়া সোজা উপরের দিকে উঠিতে থাকে। চোখ জালা করে, মনে বিষাদ জাগে । \Sb 8 or