পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরবাসের ইতিকথা একেবারে যদি অন্ধ আর মূখ্য না হয়। এত বড় সহরের কোন আর কতটুকু অঞ্চল ঝকঝকে, রাজপ্ৰসাদ আর চওড়া সুন্দর পরিস্কার রাস্তাগুলি কোথায়, দুদিকের দোকানপাটগুলি কি ধাঁচের, সারি সারি দামী গাড়ী কোথায় পার্ক করছে, দেখলেই আসল ব্যাপারটা স্পষ্ট হয়ে উঠবে। ব্যবসা বাণিজ্যের সায়েবী অঞ্চলে পাক দিয়ে দেখতে যাবে আরেকটা অঞ্চল—আমাদের বড়বাজার। মাছ তারকারীর বাজারগুলি দেখবে। যারা মোটর চাপে তাদের পাড়া, যারা ট্রামেবাসে চাপে তাদের পাড়া, আর যারা পায়ে ইটে তাদের বস্তি ঘুরে ঘুরে দেখবে। কত লোক মোটর চাপে, কতলোক ট্রামেবাসে চাপে, কতলোক পায়ে হঁটে অনুমান করবে। রাস্তা দিযে যারা হঁটে, তাদের কতজনের খালি গা, কতজনের গায়ে ছেড়া নোংরা জামা লক্ষ্য করবে। সুস্থ শরীরে মনের আনন্দে দৃঢ় পদক্ষেপে হঁটিছে না মান মুখে দুর্বল শরীরটা কোনরকমে বয়ে নিয়ে চলেছে, দেখবে। সহরে কটা হাসপাতাল আছে, খুজে বার করবে। আর দেখবে সেখানে চিকিৎসার ব্যবস্থা কি রকম। সহরতলীগুলিতে একবার চোখ বুলিয়ে আসবে। কত লোকের মাথা গুজবার ঠাই নেই—ফুটপাতে শুয়ে কত লোক রাত কাটায় দেখে সেটা অনুমান করবে। তারপরে ও সে যদি না বুঝতে পারে আমাদের অবস্থা কি রকম-” “আপনার সঙ্গে তর্ক করা কঠিন।” মোহন বলে, “নিন, চা খান, চা জুড়িয়ে গেল।” অনেক রাত্ৰে শ্ৰীপতি গেট খুলিয়া ভিতরে আসিল । নিজের অপরাধে মনটা তার ভারাক্রান্ত হইয়া আছে। অনুতাপ নয়, সংস্কার । নিষিদ্ধ কাজ করার অস্বস্তি বোধ । দুৰ্গা চাপা হইলে তার এত খারাপ লাগিত না । তিনমাস আগেও দুর্গা স্বামীর সংসারে ঘর কন্না করিতেছিল। বছর দুই আগে সে স্বামীর সঙ্গে কলিকাতা আসিয়াছিল। দেশে স্বামীটা তাকে বেশ ভালবাসিত, আদরষত্ব করিত । সহরে আসিয়া দিন দিন যেন কেমন হইয়া যাইতে লাগিল। মদ খায়, জুয়া খেলে, দুৰ্গাকে মারধোর করে। ঘর ভাড়া বাকী পড়ে, আজ খাওয়া জোটে তো কাল জোটে না । শেষে একদিন দুৰ্গার গয়না গাটি যা বিছু ছিল সব নিয়া কোথায় যে গোল \U0R (R