পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরবাসের ইতিকথা প্রশ্ন শুনিয়া বড়ই ক্ষোভ জাগিয়াছিল শ্ৰীপতির। তার মত লোককে মোহনের এরকম প্রশ্ন করা কি উচিত ? চার হাত লনের ফুল লতার বহরের এদিকে ঠেকিয়া দেওয়া চাকর বাকরের গ্যারেজ সন্নিহিত টালির ঘরে একসাথে থাকিতে হইয়াছিল বলিয়াই তো সে ঘনিষ্ঠভাবে পীতাম্বরের বঁাচার কায়দা জানিয়াছে ? তাকে কি উচিত জিজ্ঞাসা করা পীতাম্বরের বিষয়ে কোন কথা ? কোন জবাব না দিয়াই সে বালতি নিয়া জল আনিতে গিয়াছিল। কে জানে কোথায় গিয়াছিল মোহন অথবা নগেন, গাড়ীটাতে কাদা মাখাইয়া আনিয়াছে। কাদা সাফ করিতে তাকে কমপক্ষে সাত আট বালতি জল টানিতে হইবে । জবাব না পাওয়ায় মোহনের হইয়াছিল রাগ ॥, ধমক দিয়া সে বলিয়াছিল, “একটা কথা জিগ্যেস করলাম, জবাব দিলি না যে ? “কি জবাব দেব বলুন ? পীতম ঠাকুরকে আপনে এনেছেন বামুন সাধক বলে। আমি কলে কুলি খাটি, আপনার ঘরে চাকর খাটি-” ‘চাকর খাটো মানে ? ‘বাজার করি, মসলা বাটি, আপনার গাড়ী সাফ করি—” কী চালাক হইয়া উঠিয়াছে শ্ৰীপতি ! এমনি লাগসই ভাবে সে প্রশ্নের জবাব দিয়াছিল। মোহনের । ‘কে তোমায় বাজার করতে, মসলা বাটতে বলে ?” “আপনার মা বলেন ।” “মার কাছে মাইনে চাও না কেন ? মা তোমাকে চাকর খাটায়, মার কাছে মাইনে আদায় না করে আমার কাছে নালিশ কর কেন ?” “মাথা গুজে আছি, দুবেলা খাচ্ছি—” “সে তো আমার ব্যবস্থা শ্ৰীপতি। মার চাকর খাটতে আমি তো বলিনি তোমায় !" শ্ৰীপতি দমিয়া যায়। মোহন তাকেও কাজে লাগাইতে চায় তার ঘরোয় যুদ্ধে। মার কোন ভাগ নাই, নগেন কিন্তু বাপের টাকা আর সম্পত্তির সমান অংশীদার। নগেনকে বাগাইয়া মা যুদ্ধ শুরু করিয়াছেন মোহনের বিরুদ্ধে। মোহন চায় যে শুধু তার গাড়ীটাই সাফ করিবে—মার কোন হুকুম মানিবে না। vSObr.)