পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্রন্থাবলী ভঙ্গিতে ঘাড় উচু করিয়া নগেন কি যেন ভয়ানক কথা বলিতে গিয়াছিল, কি ভাবিয়া ভাগ্যে বলে নাই ! এখনো তবু তাকে কাছে ডাকা যায়, কথা বলা যায় গল্প করা যায়। কি সৰ্ব্বনাশই ঘটিয়া যাইত নগেন কথাগুলি বলিয়া ফেলিলে ! তখন তার মনের অবস্থা এমন, হাজার অনুতাপ বোধ করিলে ও মাথা নত করিয়া ছল ছল চোখে দাদার কাছে সে আসিয়া দাড়াইতে পারিত না, গায়ে পড়িয়া সেও পাবিত না তাকে ক্ষমা করিতে । \ এমন হইয়া গেল কিসে ? শুধুমাব কথা শুনিযা শুনিয়াই তার মনে এত বিরাগ জন্মিয়াছে দাদার বিরুদ্ধে, এত বিদ্বেষ, এত হিংস। জাগিয়াছে ? টাকা নষ্ট করিয়া সে ভাই-বােনের সর্বনাশ করিতেছে, তার বিরুদ্ধে মার বক্তব্য শুধু এই । নগেন না হয় বিশ্বাস করিয়াছে তার স্বার্থপর দাদ। তাদের ভাগের টাকাকড়ি বিষয়-সম্পত্তি নিজের সুখের জন্য উড়াইয়া দিতেছে কিন্তু এমন তীব্র এবং স্থায়ী বিদ্বেষ জন্মানোর কারণ তো সেটা নয় ? টাকা আর ভবিষ্যৎকে এত বেশী দাম দেওয়ার বয়স তার চয় নাই । নিজের স্ব{ৰ্থ সম্বন্ধে এমন ভীষণভাবে সচেতন হত ওসব কারণ বা প্ৰসোজন তার কি থাকিতে পারে ? যখন খুশী গাড়ী লইয়। নগেন বাহিব যায়, তাকে জিজ্ঞাসা কবা ও দরকার মনে করে না । মোহনের নিজের দরকাব থাকে গাড়ীর, হঠাৎ জানিতে পারে নগেন গাডী লইয়৷ চলিয়া গিয়াছে, কখন ফিরিবে ঠিক নাই। মোহন বিশেষ বিশেষ এনগেজমেণ্ট রাখিতে যায় ট্যাক্সি চাপিয়া । ট্যাক্সিও মোটর গাড়ী, তবু মোহনের মনে হয় নিমন্ত্রণ রাখিতে যাওয়ার সমস্ত আনন্দ মাটি ट्रक्षे॥ ८१व् । মোহন জিজ্ঞাসা করে না, মদন নিজেই তাকে খবর দেয়, ঝরণাকে সঙ্গে করিয়া নগেন গাড়ীতে হাওয়া খাইতে বাহির হয়। কোনদিন সহরের বাহিরে, কোনদিন সহরের ভিতরে। কোনদিন ধীরে ধীরে মদনকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গড়ের মাঠের চারিদিকে পাক খাইতে হয়, কোনদিন গ্র্যাণ্ড ট্রাঙ্ক রোড ধরিয়া চলিতে হয় উধ্বশ্বাসে । \OSV)