পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভয়ংকর বেলা তখন শেষ হয়ে এসেছে। অসময়ে সহর থেকে টাকা এসেছিল, কারখানায় পৌছে দেবার জন্য ভূষণ দত্ত প্ৰসাদকে ডেকে সাতশো তেইশ টাকা দিল। চার মাইল দূরে বিরূপ নদীর ধারে ভূষণের মন্ত চামড়ার কারখানা। কাজ শেষ হবার পরেও আজ সকলে সেখানে ধন্ন দিয়ে থাকবে, কিছু কিছু টাকা অন্তত সকলকে আজ দেওয়া চাই । নইলে কাল কেউ কাজে আসবে না। রাস্তা ধরে বীর-গী হয়ে কারখানায় যেতে অনেক সময় লাগে, রেল লাইন ডিঙিয়ে পেনোর মাঠ পার হয়ে গেলে সন্ধ্যার অন্ধকার গাঢ় হতে হতে প্ৰসাদ কারখানায় পৌছে যাবে। গুমোট হয়েছে। আকাশের এক কোণে একটুখানি কালো মেঘের সঞ্চার হয়েছে, প্ৰসাদের চােখে পড়েছিল। বুকটা তার একবার কেঁপে গেল। ভূষণকে করুণ সুরে একবার জানিয়ে দেবে কি, ঝড় উঠবার ভয়ে বাইরে যেতে তার সাহস হচ্ছে না ? বলা দূরে থাক, ভীরু চােখ তুলে ভূষণের মুখের দিকেও একবার সে তাকাতে পারল না। প্ৰসাদের দেহ দুর্বল, মন ততোধিক । নিরীহ বোকা অপদার্থ ভালোমানুষ হয়ে থেকেই বয়সটা তার ত্ৰিশের কোঠায় পৌছে গেছে। উৎসাহ বা তেজ বলে তার কিছু নেই, অভাববোধ ভোতা হয়ে গেছে। অপরাধ করে বসার ভয়েই সর্বদা সে সন্ত্রস্ত। বিশেষ করে ভূষণের কাছে। মোটাসোটা জমকালো শরীর ভূষণের, প্ৰকাণ্ড মাথায় ঠাসবুনানি কদমকেশর চুল, ফোলা ফোলা গাল, নাকের বড় বড় গহবর দুটি কঁচা-পাকা চুলে ভরা। পুরাণ ইতিহাস রূপকথার নিষ্ঠুর অত্যাচারী চরিত্রগুলি ভূষণের এই চেহারার ধাঁচেই শুধু প্ৰসাদ কল্পনা করতে পারে। প্রচণ্ড শক্তি আর নির্মম কঠোরতার প্রতীক। অবশ্য আছেন তার দেবতারা, কিন্তু তার মনে তাদের প্রভাবও ভূষণের মতো জোরালো নয়। ভূষণ প্রত্যক্ষ, জীবন্ত। প্রতি মুহুর্তে তার অস্তিত্ব, তার উপস্থিতি অনুভব করা যায়। “দাড়িয়ে রইলে যে ? ? 'ख्याख्छ मा, यछि ।' 8 DS b(t)