পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भाबिक @iहादर्ली ইয়ারে পড়বার সময় একদিন এমনি ভাবে, হয়ত প্ৰায় এমনি সময়ে, কলেজ যাবার পথে এই খানে গাড়ী থামিয়ে এই লোকটির কাছ থেকে বশীকরণ কবচ কিনেছিল । ক্লাশের একটি মেয়েকে বশ করতে চেয়ে । মেয়েটির নাম আজ মনে নেই। চেহারাও কল্পনা হয়ে গেছে। শুধু মনে আছে তার সর্বাঙ্গের স্পষ্ট উদ্ধত আহবান, হাসি কথা বিতরণের প্রাণঘাতী কাৰ্পণ্য আর অন্তহীন অবহেলা । কবচ ধারণ করে আলাপ জমাতে গিয়ে সে পাত্তা পায় নি । তারপর একদিন, অত্যন্ত হঠাৎ একদিন তাকে গাড়ীতে উঠতে দেখে মেয়েটি এসে বলেছিল, আপনার নিজের গাড়ী ? বাড়ী পৌছে দেবেন। আমায় ? তৃতীয় দিন বাড়ী পৌছে দেবার পথে সে হঠাৎ গভীর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে তার কঁাধে মাথা রেখে গা এলিয়ে দিয়েছিল। বশীকরণ কবসের এই অব্যৰ্থ ক্ষমতার পরিচয় পেয়ে স্তম্ভিত হয়ে সে সেইদিন সন্ধ্যায় দশটাকার নোট ভরা খাম। এই মহাপুরুষ দোকানীর হাতে দিয়েই পালিয়ে গিয়েছিল । মেয়েটিকে আর কোন দিন গাড়ীতে তোলে নি । তিন দিন তার কাছে অর্থহীন বাজে কৈফিয়ৎ শোনার পর মেয়েটি মুখ গম্ভীর করে তার সঙ্গে কথা বন্ধ করে দিয়েছিল। কৃষ্ণেন্দু সে ঘটনা জানে । ‘মনে আছে কেষ্ট ? সেই বশীকরণ কবচ ? তৎক্ষণাৎ আত্মসম্বরণ করে সে কথা ঘুরিয়ে নিল। বলল যে শ্ৰীপতি আর গণি নেমে গিয়ে কাঠের কারখানায় চলে যাক, সকলকে কাজে লাগতে বলুক। আজকেই মীমাংসা হয়ে যাবে- “তুমি বলেছিলে না বিহিত করতে হবে ? বাড়ী গিয়ে এখুনি বিহিত করছি।” মমতা খুন্সী হয়ে বলল, “সব কথা শোনা হল না। কিন্তু ” হীরেন প্ৰায় ধমক দিয়ে বলল, “আর শুনতে হবে না ।” কিছু দূরে খালের ব্রিজ দেখা যাচ্ছিল । ওখানে মোড় ঘুরে খাল পাড়ের রাস্তা ধরে খানিক এগোলেই লোকনাথের কাঠের কারখানা । কৃষ্ণেন্দু মৃদুস্বরে বলল, “একেবারে ঘুরে গেলে হত না পাঁচ মিনিটের জন্যে, সবাই অপেক্ষা করছে।” হীরেন সংক্ষেপে বলল, “দরকার নেই ।” লোকনাথ তার সদর বৈঠকখানায় তিনজনকে অভ্যর্থনা করলেন । মমতাকে 8 R