পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রোমান্স “পিঠে ব্যথা হয়েছে নাকি বৌ ? গোসা হয়েছে? আর মারবো না তোকে। কোন শালা আর তোর গায়ে হাত তোলে |’ “আমায় কাল তাড়িয়ে দেবে ?” “দূর পাগলি। ও কথার-কথা বলছিলাম। তোকে ছেড়ে কি থাকতে পারি ? সুখময়ী নিজেই স্বামীকে বুকে টেনে নিয়ে দাঁতে দাত লাগিয়ে চোখ বুজলা। মাদুরের ঘষায় পিঠে যেন তার করাত চলতে লাগল অনেকগুলি। একবার অজ্ঞান হয়ে গিয়ে আবার চেতনা ফিরে এল, তবু সে শব্দ করল না । আর্তনাদগুলি বুকে চেপে, গোঙানিগুলি গলায় আটকে রেখে দিল। নটবর ছেড়ে দেওয়ামাত্র সে পাশ ফিরল। আলো নিভিয়ে চৌকির বিছানায় শোবার সময় কর্তব্যবোধে নটবর বলল, “গা যেন তোর গরম দেখলাম, জর হয়েছে নাকি ?” 'qक इशcछ ।' “মেঝেতে কেন তবে ? চৌকিতে আয় ।” 'षांक्षे ' কিন্তু শেষ পর্যন্ত চৌকিতে সে গেল না । আলো নেবার আগে সে দেখেছে, পিঠের রক্তে মাদুর লাল হয়ে গেছে। নটবর ঘুমিয়ে পড়ল। অল্পক্ষণের মধ্যেই । ঘুম গাঢ় হয়ে এলে তার নাক ডাকতে আরম্ভ করল। তখন চুপিচুপি দরজা খুলে সুখময়ী বাইরে বেরিয়ে গেল । রাত বেশি হয়নি, শশধর জেগে আছে। পাড়ার লোকও হয়তো জেগে আছে অনেকে। থাক জেগে ! কতক্ষণ লাগবে তার সুবলকে দুটি কথা শুধিয়ে আসতে ? বাগান হয়ে বেগুনক্ষেত পার হলেই সুবলের বাড়ি । ডুবুডুবু চাঁদের জ্যোৎস্না এখনও একটু আছে। বাগানের গাঢ় অন্ধকার কোন রকমে পার হলে পথের চিহ্ন নজরে পড়ে। সুখময়ী তরতার করে বেগুনক্ষেতের বেড়া ঘেষে এগিয়ে গেল। তাড়াতাড়ি ফেরা চাই, নটবরের ঘুম ভেঙ্গে গেলে যাতে সহজ স্বাভাবিক বিশ্বাসযোগ্য কৈফিয়ৎটা দেওয়া যায়। সুবলের বাড়ির ঘৱে ঘরে আলো নিভেছে। তার ঘরের পাশে গাদ্দাফুলের বাগান। একটু তার ফুলের বাগান করার সখ আছে। বাড়ির সামনের বাগানটি তার দেখবার মতে, এখান থেকে নানা ফুলের মেশান গন্ধ নাকে আসে। প্রথম ডাকেই সাড়া দিয়ে নুবল বেরিয়ে এল । 'চুপ। আন্তে । আবার কেন ?” 88 G