পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধনজন যৌবন মেঝেতে বিছানো মাদুরে আছড়ে পড়ে রাঘব তখন সতর্ক চাপা গলায় আর্তনাদ করার সঙ্গে বার তিনেক জোরে জোরে নিজের কপালটা চাপড়ে দেয়। গায়ে জোর আছে, কড়া-পড়া হাতের তালু। গলার চেয়ে কপাল চাপড়ানোর श्रां९3ब्रांड् श्ङ् (स्त्रांद्रांप्लां । 'অসতী করেছে করেছে, প্ৰাণে মারতে পারল না ? ধৰ্ম্মে নিল, প্ৰাণটুকু নিতে তার কী হয়েছিল ৷” * ফাঁসি হবে বলে নিজে সুমতিকে খুন করতে পারছে না, এ আপসোস সে জন্য নয়। আপসোস এখনো সুমতিকে নিয়ে ঘর করতে হবে বলে। তাড়িয়ে দেবার ক্ষমতা তার নেই, বিরাগী হয়ে ছেড়ে যাবার ক্ষমতা নেই। লোহার মতো শক্ত তার দেহমান এই জীবন্ত কোমল চুম্বকে এটে গেছে। পিস্তলের সঙ্কেতে ছোটবাবু মৃত্যুভয় জাগিয়েছিল সুমতির, বাইরের রোয়াক থেকে এক-পা এক-প। করে পিছু হটয়ে এই ঘরে ঢুকিয়েছিল। যাওয়ার আগে একটি গুলি সুমতির উপর খরচ করে গেলেই এসব হাঙ্গামা চুকে যেত। সুমতি বলে, “কি জালা, বেশ্য নিয়েও তো কত মানুষ সুখে দিন কাটাচ্ছে। তোমার বুক জোড়া ধন বিয়ে না করা ইন্তিরিট কী ছিল আগে ? যা হয়েছে, হয়ে গেছে। অত বাড়াও কেন ? চৌকিতে তালির পর তালি দেওয়া সাবান-কাচা ময়লা মশারি। বেশি। কাঁচবার উপায় নেই, জীর্ণ মশারি ছিড়ে যায়। কোমর পর্যন্ত শরীর বার করে চৌকির প্রান্তে কনুই পেতে দুহাতের তালুতে চিবুক রেখে সুমতি নির্বিকার শান্তভাবে বলে, “আর তাও বলি, বদমাস গুণ্ডা তো নয়, লাখপতি বামুনের ছেলে। সেকালে মুনিঋষি অতিথ হলে রাজারা যেচে রানীকে পাঠিয়ে দিত তাদের কাছে, ভাগ্যি বলে মানত। একটা রাজার বংশ থাকত। নইলে ?” রাঘব উঠে বসে অসহায় ক্ৰোধে দাঁতে দাত ঘষতে থাকে। একটু যদি কঁদোকাটা করত সুমতি, একবার যদি বলত, এ-প্ৰাণ আমি আর রাখব না। গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে তাকে সাস্তুনা দেওয়া যেত। “বিছানায় এস। মিথ্যে কেন সারারাত মশার কামড় খাবে?” 8RS