পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

शांनिक ४iहांवली বিয়ের ভোজ রোধে । বাড়ির বামুনের বাড়তি পাওনা হয় না, এই হিসাব ধরে শশধর তাকে বখসিস দিতে গেলেন দুটি টাকা ! গগন দাবী করল দশ টাকা । টাকা দুটি নিয়ে কোমরে গুজে দাবীটা জানিয়ে রাগ করে সে বিদায় হয়ে গেল। বিকেলে দেখা গেল, শশধর গগনকে একেবারে গাড়িতে চাপিয়ে वांज़ी ফিরেছেন। আপিস থেকে ফিরে ঘরোয় জীবনের জন্য প্ৰস্তুত হতে শশধরের ঘণ্টা খানেক সময় লাগে ৷ গগনকে বসিয়ে তিনি প্ৰস্তুত হতে গেলেন, বেলারানী পেয়ে ফোস ফোস করতে করতে ওপর থেকে নেমে এসে বললে, “তোমার কেমন ধারা বিবেচনা গগন ? না পারলে বলে দিলেই হত আসতে পারবে না, তুমি ছাড়া কি ঠাকুর নেই দেশে ? ? “আমার মতো নেই । কেমন আছ দিদিমণি ?” মুখে জবাব দেবার দরকার নেই বলেই বেলারানী যেন নিজেকে জবাবের মতো সামনে দাড় করিয়ে রাখল। বিয়ের পর, ছেলে বিয়োবার পর বেলারানী একেবারে বদলে গেছে। বিয়ের সময় তার চেহারাটি ছিল রুগ্ন বালকের মতো । সোনার হার অনায়াসে এদিক ওদিক দোল খেত। ছেলেট এসে তাকে এমন করে দিয়েছে যে দেখলে মনে হয়, এখনো সে মা হয়নি, হতে চায়। ক্রমে ক্রমে পাওয়ার বদলে হঠাৎ পাওয়া এই সম্পদ নিয়ে বেলারানী আর বঁাচে না, তাকে চটিয়ে দিয়েও রাস্তার লোকের পর্যন্ত তাকিয়ে যাওয়া চাই। “মরণ তোমার !” -বলে অভিশাপ দিয়ে সরে যাবার সুযোগ না পেলে মনটা খারাপ হয়ে যায় । বাপের বাড়ি এসেই বেলা সকলের আগে পাড়ার চেনা মানুষদের বাড়ী ঘুরে এসেছে, বিয়ের আগে তেরো বছরের ছেলের মতো আঠারো বছরের নিঃস্ব বেলাকে দেখে যারা না জানি কি ভাবত । বিশেষভাবে আদর করে বাড়িতে ডেকে এনেছে সেই সব বিবাহিতা ও অবিবাহিতা সঙ্গিনীদের, যাদের হাসাহসি তার রক্তকে তেতো করে দিয়েছিল। বিয়ের পর, ছেলে হবার পর, গগনও তাকে আর দেখে নি। ব্যাকুল হয়ে সিঁড়ি ভেঙ্গে নিচে নেমে বেলারানী ছোট ছোট নিশ্বাস ফেলছে। বুক দুরদুর করছে বেলারানীর। গগনের কি চোখ নেই? তাকে জিজ্ঞেস করা, সে কেমন আছে। তবে হ্যা, অনেক দেরিতে দেরিতে পলক পড়ছে বটে। গগনের চােখে, দৃষ্টি বুলিয়ে বুলিয়ে কি যেন সে মাখিয়ে দিচ্ছে সারা গায়ে, গা খাতে শিরশির করে। SVAR