পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিশেহারা। হরিণী হাঙ্গামাটা ঘটতে দিতে দোষ কি ? যতীন অথবা বিশুকে বিয়ে করা সহজ, দ্বিতীয়পক্ষ হলেও বিশু ব্রিলিয়ান্ট স্টডেণ্ট। কিন্তু ওদের দুজনকে তার পাটিতে সমৰ্পণ করার কথা, নিকগে পাটি ওদের। হাবুলকে হলেই তার চলবে। পার্ট আপত্তি করবে না, হাবুল আগে থেকেই পাটির মেম্বার। দুজনে মিলে তারা কাজ করতে পারবে। বাড়িতে কেবল হুলস্থল পড়ে যাবে হাবুলকে সে বিয়ে করতে চায় শুনে ! বাবাও সহজে মত দেবেন না ! কিন্তু সেজন্য মুগনয়নার বিশেষ ভাবনা নেই। বাড়িতে একটা প্ৰচণ্ড ঝড় তুলে দিয়ে শেষ পর্যন্ত হাবুলকে সে বিয়ে করতে পারবে । হাবুল ছাড়া আর কাউকে বিয়েও করা যায় না। অত তেজ, অত আগুন কার মধ্যে আছে ? যতীন আর বিশু দুজনেই বড় বেশি ভালোমানুষ আর ছেলেমানুষ ! ওদের মনে ব্যথা লাগবে। পার্টির কাজে জীবন উৎসর্গ করেও হয়তো ব্যথাটা সম্পূর্ণ উবে যাবে না। মৃগনয়না ওদের জন্য যতদূর সম্ভব করবে। সর্বদা তাকে কেন্দ্ৰ করে বেঁচে থাকবার সুযোগ ওরা পাবে। সন্ধ্যার পর পার্টির পাঁচজন প্ৰধানদের মধ্যে চারজনের কাছে মৃগনয়না তার বিয়ের প্রস্তাব পেশ করল । মিসেস বসাককে আজ বিশেষ করে আনাবার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মেয়েদের তিনি বোধ্য বিষয় চমৎকার বুঝিয়ে দিতে পারেন। সেক্রেটারি ধরণীবাবুর মুখ প্ৰতিদিনের মতো একান্ত নির্বিকার, কালা ও বোবা মানুষের মতো তাকে বিচ্ছিন্ন, স্বতন্ত্র মনে হয়। কিন্তু কথা যখন তিনি বলেন, মনে হয়। একজন পরমাত্মীয় এতক্ষণ ছদ্মবেশ ধরে ছিলেন । ধীরেন। বড়লোকের ছেলে, কলেজে পড়ে এবং একজন স্টডেণ্ট-লীডার, পার্টির কোন মেয়েকে কাছে ঘেষতে দেয় না। রহমান প্রপাগাণ্ডা। সেক্রেটারি। নরেশ আগে চুপচাপ মানুষ ছিল, পার্টির একটি সমবয়সী মেয়েকে বিয়ে করার পর আজকাল বড় বেশি। কথা কয় । মৃগনয়নার কথা শুনে সে উৎসাহিত হয়ে উঠল, “বিয়ে করবে ? কনগ্র্যাচুলেশানস! বিয়ের সাধটা শেষ পর্যন্ত উপে যাবে ভেবে রীতিমত উৎকষ্ঠিত হয়ে পড়েছিলাম ভাই। যে কাজের ভারটাই নিয়েছ!’ " ۔۔۔ মিসেস বসাক বললেন, “আঃ, আপনি চুপ করুন। কিন্তু মৃগনয়না, তোমার কাছে যে আরও অনেক কিছু পাটি আশা করছে! আরও কয়েকবছর তুমি আরও 8 (XV9