পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী একেবারে সোজাসুজি ধরে বেঁধে কারখানায় নিবিচারে লোক ঢোকানো শুরু হয়ে গেল-নিজে না চাষলে ক্ষেতে যার চাষ হবে না। তাকে পর্যন্ত । গোয়ালাপাড়া উঠে গেল এক মাইল তফাতে একটা জলার ধারে, ওখানে ছাড়া অন্য কোথাও তাদের ঘর তুলতে অনুমতি দেবার উপায় বিলামসন খুঁজে পেল না। নদীর ওপারের সেই বাগদীপাড়ার সকলকে পুরো একমাস মাটি ফেলে নদীর ধার উচু করার কাজে লেগে থাকতে হল। | অতি ক্ষুদ্র সে নদী, বছরে দুমাসের বেশি জল থাকে না, আজ পর্যন্ত এ নদীতে কোনদিন বন্যা হয়েছে বলে কেউ স্মরণ করতে পারে না। কিন্তু বিলামসনের ধনুকভাঙ্গা পণ, একটা মাস বেগার খেটে বন্যার হাত থেকে নিজেদের তারা বঁাচাবেই বঁচাবে। দিন এনে দিন কিনে তারা আধাপেটা সিকিপেটা খেত, তিনদিন, বিনা পয়সায় মাটিকাটার পর তাদের উপোস শুরু হয়ে গেল। যে হাতে লাঠি ধরে বিলামসনেব কুকুর ঠেঙ্গিয়ে মেরেছিল সেই হাতে কোদাল ধরার জোরও আর রইল না। তখন বিলামসন একটা কারখানা থেকে অগ্রিম মজুবি আনিয়ে তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিল। কিন্তু মাটিকাট বন্ধ হল না । গুর্থ দরোয়ানেরা ঠিায় দাড়িযে থেকে পুরো একটি মাস তাদের দিয়ে তাদের নিজেদেরই মঙ্গল করাল। একমাস শয্যাশায়ী হয়ে থেকে ধূর্জটি সেরে উঠল। মনে হল, বিলামসনের কুকুরের কামড় খেয়ে তার মাথাটাও বিগডে গেছে। শোভায় বিচিত্র এই যে একটা সুন্দর জগৎ আছে, সুখ শান্তি আরামের মতো অপূর্ব আশীৰ্বাদ আছে, জীবনে একশ দেড়শ টাকার চাকরি আর সুন্দরী বৌ প্ৰভৃতি বিস্ময়কর সম্ভাবনা আছে অদূর ভবিষ্যতে, এসব সে যেন স্রেফ ভুলে গেল। দিবারাত্রি টো টাে করে ঘুরে ঘুরে অন্য সব মাথাগুলি বিগড়ে দেবার চেষ্টা ছাড়া তার যেন আর কাজ রইল না । মাথা প্ৰায় সকলেরই কমবেশি খারাপ হয়েছিল, তবু সে মাথাগুলি বিগড়ে দিতে কী পরিশ্রমটাই যে করতে হল ধূর্জটির! এতদিন বিচ্ছিন্নভাবে ইতস্তত छgिcश छिल भाथigलि । কয়েকজন শিন্য জোটায় অতিকষ্টে মাথাগুলিকে ধূর্জটি কাছাকাছি এনে ফেলল। কি যেন ঘটে গেল তখন নিরীহ গোবেচারী মানুষগুলির মধ্যে, চারিদিকে অভিশাপ শোনা যেতে লাগল, বিলামসন নিপাত যাও ! . * 8 Պեր