পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী গুণমতীর শরীর ছিপছিপে, গলাও বঁশির মতো সরু । কাতর হলে ভারী মিহি আর মিষ্টি শোনায়। পেটের জালায় কাতর হয়ে না থাকলে গোবর্ধন হয়তো রাগও করত না, কুমড়ো নিয়ে অসময়ে ঘরের বাইরে যাবার সাহসও খুঁজে 6°75 व्ा । “কিনবে নি তো কিনবে নি। নালায় ফিকে দিয়ে চলে এসব ।” এই বলে কঁাধের নিটােল কুমড়োটি বাগিয়ে ধরতে গিয়ে গোবর্ধনের হাত পড়ল গতে । অঙ্গনে নামিয়ে রেখে সে তাকিয়ে রইল কুমড়োটির দিকে। এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত চার আঙ্গুল চওড়া একটি ফালি কুমড়ে থেকে কে কেটে নিয়েছে। এক চড়েই গুণমতী কেঁদে ফেলল—ডুকরে নয় ফোস ফোসিয়ে। শুধু কঁাদল না, বিনিয়ে বিনিয়ে নিজের পক্ষ সমর্থনও করে চলল সেই সঙ্গে। গোবধান যে বলেছিল কুমড়োটা সে বেচাবে না ! লোকের কিপ্টেপণাকে গাল দিতে দিতে জোর গলায় সে যে বলেছিল কুমড়োটা ঘরে পচাবে তবু বেচাবে না ! তাই শুনে গুণমতী যদি এক ফালি কেটেই নিয়ে থাকে। আর রানীকে এক রাত্তি একটু দিয়ে, তরকারী রোধে থাকে গোবধানের জন্য, কি এমন ঘাটতি হয়েছে তার যে তাকে চড় মারবে গোবধান । গোবধান কুমড়ো নিয়ে বেরিয়ে যাবার পরেই তার কান্না থেমে গেল। কান্না যে শেষ হয়ে গেল তা নয়, তোলা রইল। গোবধান ফিরে এলে, ঘর সংসারের সব কাজ চুকে গেলে গোবধানের তামাক টানা শেষ হলে সময় বুঝে সে আবার একটু কঁদিবে। দাওয়ার খুটিতে ঠেস দিয়ে পা ছড়িয়ে রসে নিজের মনে নিজের অদেষ্টকে গাল দিয়ে দুকথা বলতে আরম্ভ করলেই বুক ঠেলে তার কান্না আসবে। গোবধান বলবে, ইদিকে আয় নানুর মা । সে ফুপিয়ে বলবে, ন্যাকামি কোরোনি বলছি, ভাল হবেনি। কিন্তু হাঁ! গোবৰ্দ্ধন আরও নরম হয়ে তাকে সাধবে । তারপরকিন্তু যেমন সে ভাবছে তেমন ঘটবে কি-তাদের চিরদিনের রাগ সোহাগের এক ঘটনা ? শরীরটা তার শুকিয়ে গেছে ঢের, ঘুমের মতো কেমন একটা বিম ধরা ভাব সদাই যেন জড়িয়ে ধরে আছে। গোবর্ধনও কেমন হয়ে গেছে, অসহায়ের মতো কেমন দিশেহারা ভাবে চায়। আহা, পাজরাগুলো বেরিয়ে গেছে জোয়ান भांक्षbiब्र। 8a o