পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্রন্থাবলী তার চোখ দিয়া দু’ফোটা জল গড়াইয়া পড়ে। বারান্দায় জুতার শব্দ হয়। স্বামীর পদশব্দ কমলা চেনে তবু সে যেন চমকাইয় ওঠে। ছিটকাইয়া গিয়া সে দরজায় খিল তুলিয়া দেয়। ছোট ছোট নিশ্বাসের দোলনে তার অপরিপুষ্ট স্তন দুটিতে দোলা লাগে। কমলা ব্লাউজের বোতাম লাগায় না। লোকের সামনে শুধু শাড়ীর আঁচলটা গায়ে জড়ায় । দরজায় টোকা দিয়া খানিকক্ষণ নীরবে অপেক্ষা করিয়া अनी वiञ भूद्ध्श् ফিরিয়া যায়। ঘরের মাঝখানে শক্ত হইয়া দাড়াইয়া কমলা যতক্ষণ শোনা যায় কাণ পাতিয়া তাহার পদশবদ শোনে । তার চোখ ছল ছল করে । আজ কিন্তু অনন্ত ফিরিয়া গেল না। রুদ্ধ দরজায় করাঘাত করিয়া বলিল, আমার সাড়া পেয়ে দরজা বন্ধ করলে যে ? মুখ দেখবে না ? খুলচি । খিল খুলিতে কমলার অনাবশ্যক সময় লাগিল। হাতে সে দু'গাছা শাখা পরিয়াছে, খিল খুলিবার সময় সরু রুলির পাশে শাখা দুটি কি চমৎকার মানাইয়াছে চোখে পড়ায় সে অবাক হইয়া গিয়াছিল। অনন্তের বয়স ত্ৰিশ বত্ৰিশ, সুঠাম চেহারা । শরীর দেখিয়া স্বাস্থ্যের অভাব অনুমান করা যায় না, চোখ দু'টি কিন্তু তাহার সর্বদা ক্লান্ত, নিদ্রাতুর। যারা হাইপাওয়ারের চশমা ব্যবহার করে, চশমা খুলিয়া রাখিলে তাদের চোখ। যেমন ঢুলু ঢুলু দেখায় তেমনি । হাসিয়া বলিল, এ যেন আমার নিদ্রাপুরী কমলা। দুয়ার খুলেও খুলতে 53 a । কমলা চুপ করিয়া রহিল। কমলার মুখ দেখিয়া হাসি বন্ধ করিয়া অনন্ত বলিল, বিরক্ত করলাম ? কিন্তু মুখ দেখে যে মনে হয় বিরক্তির সীমা নেই! মনে হয় কি মনে হয় ? অনন্ত একটু ভাবিয়া বলিল, মনে হয় এটা যেন জেলখানার সেল, আর তুমি