পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী কি মনে করিয়া নন্দ আর গোলমাল না করিয়া দুধ খাইল । রাত্রে আবার দুধ খাইবার পালা । অন্ধকার গাঢ় বলিয়া এখন আর আলো জ্বলিতে কোন বাধা নাই। আলো জালিয়াই সুমতির চমক লাগিল। নন্দর অভূতপূর্ব ভাবাপরিবর্তন ঘটিয়াছে। চেয়ারে বসিয়া সে একটা পা টেবিলের উপর তুলিয়া দিয়াছে, দুই হাতের দশটা আঙ্গুলে টেবিল ঠাকিয়া অত্যন্ত জলদ একটা ধ্বনি তুলিয়া তাহারি তালে তালে মাথা নাড়িতেছে। রুক্ষ বিশৃঙ্খল চুলের মধ্যে ঢেউ খেলিয়া যায়, কপালের একটা শ্ৰীহীন কুঞ্চনের বারংবার লয় ও আবির্ভাব घb, মুখখানি অস্বাভাবিক পাণ্ডার ও নিম্প্রভ মনে হয়। y সুমতি ভীত হইয়া উঠিল। “কি হয়েছে ? কি হয়েছে। আপনার ? পা নামাইয়া নন্দ সোজা হইয়া বসিল । চোখ খুলিতেই বোঝা গেল দু'চোখ তাহার জবা ফুলের মত লাল হইয়া উঠিয়াছে। অথচ কথা সে কহিল রসিকতা করিয়া । “আমার প্রবল আনন্দ হয়েছে সুমতি ।” আনন্দই বটে। বিবৰ্ণ মুখে সুমতি বলিল “কেন ? কেন আপনার এমন उन्मि 'ब्ल ?' ‘পড়’-না ! একটি দুমড়ানো পত্ৰ সুমতির হাতে গুজিয়া দিল । সুমতি পড়িল। নন্দর কাকার পত্ৰ। সংবাদ সংক্ষিপ্ত। বিগত সতেরই শ্রাবণ সীতার বৈধব্য ঘটিয়াছে। নৌকা করিয়া কেদার গ্রামান্তরে যাইতেছিল। নৌকাতেই সে প্ৰাণ ভরিয়া মদ খায় । সুতরাং বর্ষার নদীতে টলিয়া গিয়া আর উঠতে श्रां८द्ध बांदेरे । কেমন করিয়া কেদার নদীর মধ্যে টলিয়া পড়িয়াছিল চিঠিতে সে কথা 6लcoों बांई । সুমতি বহুক্ষণ মুখ তুলিতে পারিল না। শুষ্ক চোখ দেখিয়া নন্দ কি ভাবিবে কে জানে! নন্দর মধ্যস্থতায় অচেনা সীতার জন্য সুমতি সত্যই একটু একটু মমতা বোধ করিতে আরম্ভ করিয়াছিল। তাহার ইচ্ছা দুফোটা চােখের জল ফ্যালে। কিন্তু অশ্রু আজ দুর্লভ। জীবনটা সম্প্রতি নানাবিধ নাটকীয় উপাদানে এমনি অভিনব হইয়া উঠিয়াছে যে চোখে জল আনা আর সহজ নয়। (V8