পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

邻计夺h ‘একটু দরকার ছিল তাই যাইনি। কাল যাব।” অক্ষয় শুষ্ককণ্ঠে বলিল “কাল যাবে, কাল!—কাল আমার নতুন কম্পাউণ্ডার আসবে সকালবেলা, সে কোথায় থাকবে শুনি ?” “সে আসবার আগেই আমি যাব অক্ষয়বাৰু।” অক্ষয় বিরক্ত হইয়া বলিল “আমার মাইনে করা কম্পাউণ্ডার আমায় অক্ষয়বাবু বলে এ আমি পছন্দ করি না। নন্দ। চিরকাল ডাক্তারবাবু বলে এসেছ, যাবার আগে আজ অকারণে একটা মনোমালিন্যের সৃষ্টি কোরো না। তা তুমি ঘরের মধ্যে এত রাত্রে পাক খােচ্ছ কেন ? ካ নন্দ ক্ষীণভাবে হাসিবার চেষ্টা করিয়া বলিল ‘পরিশ্রম করছি। ঘুম আসে না। ডাক্তারবাবু।” “কোথাও যাবার সময় এরকম হয়’ বলিয়া অক্ষয় অন্দরের দিকে পা বাড়াইল । সিঁড়িটা অন্ধকার-নিবিড় জমাট অন্ধকার । অক্ষয়ের চোখ যেন অন্ধ হইয়া গেল। কিন্তু সুইচের অবস্থান জানা সত্ত্বেও আলো সে জালিল না । বরং সিড়ির মাঝামাঝি উঠিয়া অন্ধকারে ক্ষণিক দাড়াইয়া রহিল। অক্ষয়ের ঘরে আলো জলিতেছিল। দুয়ারের সামনে পুরা পাচ মিনিটকাল দাড়াইয়া আলোটা চোখে না। সহাইয়া সে ঘরে ঢুকিতে পারিল না। কাল যে আহাৰ্য আগলাইয়া জাগিয়া বসিয়া থাকে নাই তাহারি কৈফিয়তের মতে খোকাকে বুকের কাছে নিয়া মেঝেতে আঁচল বিছাইয়া সুমতি জড়সড় হইয়া ঘুমাইয়া আছে। সিড়ি দিয়া নামা, উঠান পার হওয়া এবং নন্দর ঘরের দুয়ারে থমকিয়া দাড়াইয়া সংযত ধীর পদক্ষেপে ঘরে ঢোকা এই তিনটি কাজ করিতে সুমতির এক মিনিটের বেশী সময় লাগে না । অন্ধকারে হেঁচট খাইয়া সে যে একবারও পড়িয়া যায় নাই এইটুকুই আশ্চর্য। ওপরে খোকার চীৎকার শোনা যাইতেছিল, ঘুমের চোখে সুমতি তাহার হাত মাড়াইয়া দিয়া আসিয়াছে। কান পাতিয়া খোকার কান্না শুনিয়া সুমতি অনুতপ্ত হইয়া উঠিল। অমন করিয়া দিশেহারা হইবার কোন কারণ ছিল না । খোকার হাত যদি ভাঙ্গিয়া গিয়া থাকে? এতকাল বুকে করিয়া মানুষ করিয়া এমন ভাবে খোকার কাছে বিদায় নিতে হইল তাহার । ” নন্দ বলিল ‘কি সুমতি শেষ বিদায় নিতে এলে বুঝি ? 《心>