পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

९gश्लिन्नाङ्ग्रेन একুশ বছর বয়েসের সময় সুনীতি নামে একটি প্রায় একুশ বছর বয়সী মেয়ের সঙ্গে প্ৰমথের কয়েকমাসের জন্য খুব ভালবাসা হয়। সেই তার প্রথম বাস্তব ভালবাসা, সুতরাং, ব্যাপারটা তার পক্ষে একটু প্ৰচণ্ডই হইয়াছিল। বাকী জীবনটা সুনীতিকে ভালবাসিয়া কাটাইয়া দিতে পারিলে নিজেকে সে ধন্য জ্ঞান করিত সন্দেহ নাই, কিন্তু দুঃখের বিষয় সুনীতি নিজের বেল পাতলা একগাছি চুল আর প্ৰমথের বেলা জাহাজ-বাধা কাছি দিয়া পরস্পরের বঁাধার্বাধির ব্যবস্থা করায় তৃতীয় এক ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটামাত্র বঁাধনটা গিয়াছিল ছিড়িয়া । ફ્રેન বীভৎস রকম বিস্মিত হইয়া লক্ষ্য করিয়া দেখিয়াছিল যে সুনীতির জীবনে এই তৃতীয় ব্যক্তিটিব আবির্ভাব যেন তারই আবির্ভাবের পুনরাভিনয় এবং বাধাবাধির ব্যবস্থাটাও অবিকল একই রকম। তৃতীয় ব্যক্তিটির প্রতি প্রমথ তাই হিংসার লেশটুকুও অনুভব কবে নাই। তার বরং মনে হইয়াছিল যে কয়েকমাস পরে নিজের ভালবাসার দড়িতে বেচারীর যে ফঁাসি লাগিবে সে জন্য ওকে তার মায়া করাই উচিত । এখন, এধরনের দু’চারটা ছেলেমেয়ে সংসারে থাকিবেই একঘেয়ে জীবনযাপনেব হাত হইতে রেহাই পাওয়ার জন্য, ছুটিছাঁটায় বেড়াইতে যাওয়ার মত মাঝে মাঝে জীবনে যারা প্রেমের বৈচিত্ৰ্য আনে। টানিয়াই আনে, মন অথবা গায়ের জোবে : অর্থাৎ, কালচার অথবা রূপের আকর্ষণে । এই আকর্ষণে যখন সেই ধরনের ছেলে মেয়েরা সাড়া দেয় বেহিসাবী আত্মসমৰ্পণ যাদের স্বভাব, তখন হয় একটু মুন্ধিল । মিলন তাদের প্রেমকে আরও জোরালো, আরো ঘনীভূত করিয়া দেয় এবং তার পর যথাসময়ে যখন আসে বিচ্ছেদ তখন সামলানো হয় কঠিন। ব্যর্থ প্ৰেম কিছু নয, বিরহ শুধু মনের কষ্ট, ও-সমস্তের জন্য মানুষের খুব বেশী আসিয়া যায় না,-ছেলে স্বর্গে গেলে মাকেও তো তা সহিতে হয়। কিন্তু সবচেয়ে ভয়ানক মনে হয় ট্রাজিডিটা, যখন বুঝিতে পারা যায় যাকে ভালবাসিয়াছিলাম তার হৃদয় হৃদয়ের রীতিনীতি মানে না, আমাকে সরল সহজ ভালমানুষ পাইয়া, আমার প্রথম যৌবনের অমূল্য সম্পদটুকু সে আমাকে ঠকাইয়া গ্ৰহণ করিয়াছে—শুধু একটু মজা করার জন্য। বিবাহের আগেই সুনীতির সঙ্গে তার যে অন্যায় ঘনিষ্ঠতা জন্মিয়াছিল। এই অপরাধটা প্রমথ নিজের বলিয়াই জানিত ; ও দোষটা কখনো মেয়েদের হয় না। তাব লজ, দুঃখ ও অনুতাপের পরিমাণ দেখিয়া সুনীতি হাসিত। ዕ ግቅ