পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্ৰন্থাবলী এমন যে সোনামাসী, গায়ের রঙ যার খাদ মেশানো পেতলের মত, তার বারো বছরের ট্যাবটেবে ছিচকাদুনে মেয়ে টেপির সঙ্গে নরেশের বড় ভাব। দুৰ্গা বারণ করে ভয় দেখায়। বলে, তোর কি মরণ নেই রে লক্ষ্মীছাড়া, সোনামাসীর ঘরে আন্দর খেতে যাস ? ঘরের আদরে পেট ভরে না তোর ? ও মেয়ে দিয়ে ব্যবসা করবে। সোনামাসী, তাও কি টের পাসনে তুই হাড়হাবাতে ? ফের যাবি তো তোর দাদাকে বলে হাড় ওঁড়িয়ে দেব বলে রাখছি।” নরেশ অমান বদনে মিথ্যা বলে, “যাই না তো । তোমার খালি বাজে সনদ ।” এরা ছাড়া আছে মোটা শিবু, রোগা শরৎ, বুড়ো গগন, ক্ষান্ত পিসী, রাণীর মা, পাগলা ইত্যাদি আরও কয়েকজন ভাড়াটে ।

  • গোপালের সাতটি ছেলে মেয়ে, বন্ডটির বয়স পনের বছর । গোপালের বৌ ন’মাস পোয়াতি। তাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখলে তাক লেগে যায়, ভাবা যায় না পেটের ভারে সামনে হুমডি খেয়ে পড়া সে কিসের জোরে ঠেকিয়ে রেখেছে। চুল ওঠা মাথায় টাকের মত চওড়া সীথিতে ছটাক খানেক সিদুর, কপালের ফ্যাকাসে ঢিলে কালে চামডায় চওড়া সি দুরের ফোটা, সাদাটে গভীর চোখ, ঠিক যেন যন্ত্রণায় জোরে চাপা কেঁচকানো ঠোঁট আর জীৰ্ণশীর্ণ পেটমোটা কঙ্কালসার দেহ দেখে পাড়ায় কাণাকণি চলে যে ছেলে বিয়োবার সুখ ভোগ করতে কোন উপদেবী-হয়তো বা গর্ভটর্ভ নষ্ট করার পাপে উপদেবী হয়েছিল এমন কেউ—ম হবার সুখ ভোগ করতে গোপালের স্ত্রীকে ভর করে আছে। বছর বছর ছেলে মেয়ে হয়। অনেকের, জীর্ণশীর্ণ রুগ্ন মায়েরও কোন অভাব নেই। কিন্তু এমন চেহারা নিয়ে এত ছেলে বিইয়ে যে কেউ নিজেও বেঁচে থাকে, বিয়োনো ছেলে মেয়েগুলিও সবকটা বেঁচে থাকে-এমন অদ্ভুত ব্যাপার কেউ কখনো দ্যাখে নি ।

মা ও ছেলেমেয়েগুলি সবাই যেন এই মরে তো এই মরে-অথচ একটাও মরে না ! এ রহস্য কি মাগনা সম্ভব হয় ? শুধু কি তাই ? গোপালের বৌ যে অমন তেজের সঙ্গে ঝগড়া করে সে তেজ সে পায় কোথায় ? 画 ক্ষান্ত পিসীর ছেলে বিন্দোও মিস্ত্রী । বিশেষ কোন দক্ষতা নেই, সাধারণ Ve )